সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন দিকগুলি আলোচনা করো। |
সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন দিক
সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন দিক বা রূপ বর্তমান। যথা-
প্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ
কোনো ব্যক্তিবিশেষের একক প্রচেষ্টায় বা অনেকজনের মিলিত প্রয়াসে যখন এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল এক শাসনাধীনে এসে শাসিত হয়, তখন তাকে প্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ (Formal Imperialism) বলে। প্রাচীন মিশরীয় সাম্রাজ্য, ম্যাসিডনীয় সাম্রাজ্য, রোমান সাম্রাজ্য এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।
অপ্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ
যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ জয় করে প্রত্যক্ষভাবে শাসন করার বদলে বাণিজ্যের মাধ্যমে আর্থিক অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ক্রমে দেশটির রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠা হল অপ্রথাগত সাম্রাজ্যবাদ (Informal Imperialism)। উদাহরণ হিসেবে চিনে ইউরোপ তথা বিভিন্ন দেশের প্রভাববলয় গড়ে তোলার কথা বলা যায়।
অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ (Economic Imperialism)
সাম্রাজ্যবাদের যে রূপটি প্রবলভাবে প্রকাশ পেয়েছিল তা হল অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। সাম্রাজ্যবাদ সম্প্রসারণের মূলে ছিল শিল্পসমৃদ্ধ পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপীয় দেশগুলিতে নতুন অর্থনৈতিক শক্তি তথা ধনতন্ত্রবাদের বিকাশ।
সামরিক সাম্রাজ্যবাদ (Military Imperialism)
সাম্রাজ্যবাদের অন্যতম প্রধান রূপ হল এর সামরিক দিক। অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে সামরিক উদ্দেশ্যের সংযোজন প্রায় প্রতিটি ইউরোপীয় দেশকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিতে পরিণত করে। সুতরাং, সামরিক কারণেও ইউরোপীয় দেশগুলি সাম্রাজ্যের প্রয়োজন উপলব্ধি করে।
সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ (Cultural Imperialism)
সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ হল সাম্রাজ্যবাদের অপর একটি দিক। সাম্রাজ্যবাদী সম্প্রসারণের মাধ্যমে অনুন্নত জাতিগুলিকে সভ্য করে তোলার আদর্শ প্রচার করেন ইউরোপের কিছু চিন্তাশীল ব্যক্তি। সাম্রাজ্যবাদীরা আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলির সাংস্কৃতিক জীবনের উপর চরম আঘাত হানে এবং উপনিবেশের ভাষা, সাহিত্য ও ধর্মকে প্রবলভাবে ঘৃণা করে।
আরও পড়ুন – ভারতে রেলপথ প্রবর্তনের উদ্দেশ্য আলোচনা করো