সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রেক্ষাপট
- বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ সৃষ্টি হয়। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠার পর ১৯০৯ ও ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে মুসলিমদের পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়। এরপর সাইমন কমিশন গঠিত হলে তার ভিত্তিতে লন্ডনে গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করা হয়।
- জাতীয় কংগ্রেস গোলটেবিল বৈঠকের প্রথম অধিবেশনে যোগ না দিলেও গান্ধিজি গোলটেবিল বৈঠকের দ্বিতীয় অধিবেশনে যোগ দেন। মহম্মদ আলি জিন্নাহ, বি আর আম্বেদকর, সরোজিনী নাইডু প্রমুখরা এই অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।
- দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকের অধিবেশনের পর মুসলিম নেতৃবৃন্দ জানান যে, তাঁদের দাবি সুরক্ষিত না হলে কোনো সংবিধান তাঁদের পক্ষে মানা সম্ভবপর নয়। গান্ধিজি এই দাবিকে অগ্রাহ্য করে নিজের দাবি তুলে ধরেন। প্রকৃতপক্ষে লন্ডনে আয়োজিত দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকের এই অধিবেশনটিই ছিল সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রধান ক্ষেত্র।
ভারতীয়দের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রতিক্রিয়া
ভারতীয়দের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল-
(ক) গান্ধিজির প্রতিক্রিয়া
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতিকে গান্ধিজি ভারতের হিন্দু-মুসলিম ঐক্য এবং জাতীয়তাবাদকে আক্রমণের জন্য ব্যবহৃত ব্রিটিশ সরকারের একটি শাণিত অস্ত্র বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর তিনি এই নীতির একপেশে এবং গণতন্ত্রবিরোধী চরিত্রের বিরুদ্ধে জারবেদা জেলে আমরণ অনশন শুরু করেন।
(খ) আইন অমান্য আন্দোলন উপেক্ষিত
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ‘সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা’ নীতি ঘোষিত হওয়ার পরে গান্ধিজির নেতৃত্বে পরিচালিত আইন অমান্য আন্দোলনের গতি স্তিমিত হয়ে পড়ে।
(গ) পুনা চুক্তি’ স্বাক্ষর
ইতিমধ্যে অনুন্নত শ্রেণির নেতা বি আর আম্বেদকর এবং বর্ণহিন্দুদের নেতা মদনমোহন মালব্য গান্ধিজির সঙ্গে জেলে সাক্ষাৎ করে সমস্যাসমাধানে উদ্যোগী হন। অবশেষে আম্বেদকরের সঙ্গে গান্ধিজি সমঝোতায় আসেন এবং ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর উভয়ের মধ্যে পুনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।