মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো – আজকের পর্বে মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল।

    মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

    মহাশ্বেতা দেবীর লেখা 'ভাত' গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো
    মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।

    মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পের উচ্ছব নাইয়ার চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য

    মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ছোটোগল্প ‘ভাত’-এ উচ্ছব নাইয়া সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের একজন ভূমিহীন মজুর। তার আসল নাম উৎসব নাইয়া, পিতা হরিচরণ নাইয়া, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে নিয়ে সে মাতলা নদীর পাড়ে বসবাস করে। এই গল্পের ছোটো পরিসরে উচ্ছবের চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্যগুলি ফুটে ওঠে তা হল-

    পরিবারের প্রতি ভালোবাসা

    উচ্ছবের অভাবের সংসার ছিল স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে নিয়ে পূর্ণ। সেই সংসারে যখন বিপর্যয় নেমে আসে তখন উচ্ছব ভগবানকে ডেকেছিল বিপদ উদ্ধারের জন্য। কিন্তু ভগবান উচ্ছবের ডাক শুনল না, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল মাতলার বন্যা। ঝড়ে চাপা পড়ল উচ্ছবের সংসার। সে স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে খোঁজে পাগলের মতো। তার পরিবারের জন্য সে এতই ব্যাকুল ছিল যে ত্রাণে দেওয়া রান্না খিচুড়ি সে খায়নি।

    সরল, সাদাসিধা চরিত্র

    উচ্ছব জনমজুর খাটে সতীশ মিস্তিরির জমিতে বছরের কয়েকমাস। তাতেই উচ্ছবের পরিবার ভাতের মুখ দেখে, কিন্তু সারা বছর নয়। সেই মনিবের জমির হরকুন, পাটনাই, মোটা-তিন ধরনের ধানে মড়ক লাগলে উচ্ছবের মাথায় হাত, কেঁদে কেটে সারা হয়। অর্থাৎ মনিবের ক্ষতি যেন তার নিজের ক্ষতি। এমনই সরল মানুষ ছিল সে।

    অনুগত

    ভাতের আকাঙ্ক্ষায় উচ্ছব কাজে ঢুকেছিল বাসিনীর মনিব বাড়িতে। বড়োবাড়িতে পিসিমার নির্দেশ মতো কাজ করে গেছে। ভাত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তার মনকে উথালপাতাল করলেও সে কাজে গাফিলতি দেখায়নি। বরং ভাত পাবে এই আশায় সে যজ্ঞের আড়াই মণ কাঠ কেটে ফেলে। বেশ কয়েকবার ভাত পাবে এমন আশা দেখলেও শেষ পর্যন্ত ভাত না পেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে উচ্ছব। এমনকি বাড়ির বুড়ো কর্তা মারা যাওয়ায় ভাত পাওয়ার আশা নিভে যেতে বসলেও তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি উচ্ছব।

    স্বাভাবিক প্রবৃত্তি

    বড়ো বাড়ির বড়োকর্তার মৃত্যুর পর পিসিমার নির্দেশে বাসিনী সব রান্না ভাত-তরকারি রাস্তায় ফেলতে যায়। এই সময় নিরন্ন অভুক্ত উচ্ছব বুদ্ধি স্থির করে নেয়। বাসিনীর হাত থেকে মোটাভাতের পেতলের ডেকচি নিয়ে ছুট লাগায় উচ্ছব। স্টেশনে বসে সে মুঠো মুঠো ভাত খায়। ক্ষুধা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। যে-কোনো পরিস্থিতিতে মানুষ ক্ষুধার কাছে নতি স্বীকার করে। আলোচ্য চরিত্র উৎসব নাইয়াও ক্ষুধার তাড়নায় প্রায় অমানুষের (প্রেত, বাদার কামট) পর্যায়ে চলে গেছে।

    Leave a Comment