ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো এবং এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো এবং এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

ভারতের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে সর্বশেষ ও বৃহৎ গণ আন্দোলন হিসেবে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলন বা আগস্ট আন্দোলনের ভূমিকা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। গান্ধিজির করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমগ্র ভারতবাসী এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য

(ক) জাতীয় কংগ্রেসের মর্যাদার পুনঃপ্রতিষ্ঠা

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গান্ধিজির অনশন, কংগ্রেসের নেতাদের কারাবরণ, আত্মত্যাগ প্রভৃতি কার্যকলাপ জাতীয় কংগ্রেসের মর্যাদাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিল।

(খ) গণবিদ্রোহের রূপদান

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, নারীসমাজের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক ও স্বতঃস্ফূর্ত। অর্থাৎ এই আন্দোলন ছিল এক স্বতঃস্ফূর্ত গণ অভ্যুত্থান।

(গ) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা

মুসলিম লিগ এই আন্দোলন থেকে দূরে সরে থাকলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ছিল এই আন্দোলনের এক বিশাল সম্পদ।

(ঘ) স্বাধীনতার আকাঙ্খা

ভারত ছাড়ো আন্দোলন দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, স্বাধীনতার জন্য ভারতবাসী উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠেছিল এবং তা অর্জন করার জন্য তারা সকলপ্রকার অত্যাচার, লাঞ্ছনা এমনকি মৃত্যুবরণেও প্রস্তুত।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ

গান্ধিজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নারীরা ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।

(ক) অরুণা আসফ আলি

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর যখন সমস্ত নেতারা গ্রেফতার হন তখন তার প্রতিবাদে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সক্রিয় সদস্যা অরুণা আসফ আলি বোম্বাইয়ের গোয়ালিয়া ট্যাংক ময়দানে কংগ্রেসি পতাকা উত্তোলন করেন।

(খ) সরোজিনী নাইডু

ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হওয়ার পর গান্ধিজি, জওহরলাল নেহরু, বল্লভভাই প্যাটেল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ গ্রেফতার হলে গান্ধিবাদী নেত্রী সরোজিনী নাইডু এই আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।

(গ) ঊষা মেহতা

বিখ্যাত কংগ্রেস নেত্রী ঊষা মেহতা ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় গোপনে কংগ্রেসের একটি বেতারকেন্দ্র পরিচালনা করতেন, যার মাধ্যমে গান্ধিজি-সহ অন্যান্য জাতীয় নেতাদের বক্তৃতা প্রচারিত হত।

(ঘ) মাতঙ্গিনী হাজরা

মেদিনীপুরের ৭৩ বছরের বৃদ্ধা মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন ভারত ছাড়ো আন্দোলনের একজন সক্রিয় নেত্রী। পুলিশি নির্দেশ অমান্য করে মাতঙ্গিনীর নেতৃত্বে এক মিছিল অগ্রসর হলে তাঁকে গুলি করা হয়। জাতীয় কংগ্রেসের পতাকা হাতে তিনি শহিদের মৃত্যুবরণ করেন।

Leave a Comment