বঙ্গদেশে চিত্রকলার ইতিহাসে ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান ও স্বকীয়তা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো

বঙ্গদেশে চিত্রকলার ইতিহাসে ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান ও স্বকীয়তা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো

বঙ্গদেশে চিত্রকলার ইতিহাসে ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান ও স্বকীয়তা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো
বঙ্গদেশে চিত্রকলার ইতিহাসে ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান ও স্বকীয়তা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।

রামকিঙ্কর বেইজ (১৯০৬-১৯৮০) ছিলেন শান্তিনিকেতনের ছাত্র। শান্তিনিকেতনে প্রথমে পড়ুয়া হিসেবেই তাঁর আগমন ঘটে। তারপর শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর শেষজীবনটি শান্তিনিকেতনেই অতিবাহিত করেন। তিনি অবসর নেন ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে। বাঁকুড়ার বিদগ্ধ মানুষ ও প্রবাসী, Modern review -এর সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় শিল্পী রামকিঙ্কর বেইজের শিল্প প্রতিভার পরিচয় পান ও তাঁকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসেন। সেখানে শিল্পী রামকিঙ্কর বেইজ নন্দলাল বসুর সাহচর্য লাভ করেন ও তাঁর সুযোগ্য তত্ত্বাবধানে নিজের শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন।

তাঁর আঁকা উৎকৃষ্ট ছবির শৈল্পিক গুণের প্রতি নির্দেশ করে নন্দলাল বসু মন্তব্য করেছিলেন- “তুমি সবই জানো, আবার এখানে কেন।” একজন চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর হিসেবে তিনি ছিলেন সুবিদিত। তেল রং ও জলরঙের মিশ্রণে তিনি যেমন প্রকৃতিবিষয়ক ছবি আঁকেন, তেমনই সিমেন্ট ও কাঁকর-মাটি মিশিয়ে সৃষ্টি করেন অনবদ্য ভাস্কর্য। ‘সোমা জোশী’ তাঁর আঁকা প্রথম ছবি। তিনি বাল্যকাল থেকেই ছবি আঁকার প্রতি বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করেন। তিনি দেবদেবীর ছবি যেমন আঁকতেন তেমনি প্রতিবেশী ছুতোর, কামারদের কাজও তাঁকে আকর্ষণ করত ছবি আঁকার প্রতি।

তিনি অজস্র ছবি এঁকেছেন। তাঁর চিত্রে রাঢ় বাংলার মাটি ও মানুষের স্পর্শ অনুভূত হয়। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় শিল্পকলার বিবিধ বৈচিত্র্য তাঁর শিল্পকর্মে ফুটে উঠেছে। তাঁর অঙ্কিত চিত্রাবলি ও ভাস্কর্যের মধ্যে ‘শরৎকাল’, ‘কৃষ্ণের জন্ম’, ‘বিনোদিনী’, ‘মহিলা ও কুকুর’, ‘গ্রীষ্মের দুপুর’, ‘হাটের পথে’, ‘সাঁওতাল দম্পতি’, ‘সুজাতা’ প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর সমস্ত চিত্রগুলিই ছিল তাঁর নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতালব্ধ ও বাস্তব জীবন থেকে আগত। চোখে দেখা নানা দৃশ্য ও মানুষ বারেবারে তাঁর ছবিতে দৃশ্যায়িত হয়েছে। কলকাতা, বোম্বাই (মুম্বই) ও দিল্লিতে তাঁর ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। এ দেশের প্রধান সংগ্রহশালাগুলিতে তাঁর শিল্পকর্ম সযত্নে সংরক্ষিত আছে।

আরও পড়ুন – কে বাঁচায়, কে বাঁচে গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো

Leave a Comment