প্যারিসের সন্ধি (১৮৫৬ খ্রি.)-র শর্তগুলি আলোচনা করো

প্যারিসের সন্ধি (১৮৫৬ খ্রি.)-র শর্তগুলি আলোচনা করো – আজকের পর্বে প্যারিসের সন্ধি (১৮৫৬ খ্রি.)-র শর্তগুলি আলোচনা করা হল।

    প্যারিসের সন্ধি (১৮৫৬ খ্রি.)-র শর্তগুলি আলোচনা করো

    প্যারিসের সন্ধি (১৮৫৬ খ্রি.)-র শর্তগুলি আলোচনা করো
    প্যারিসের সন্ধি (১৮৫৬ খ্রি.)-র শর্তগুলি আলোচনা করো।

    ভূমিকা

    একথা বলা হয় যে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের মূলে থাকা ইউরোপের বৃহৎ দেশগুলি রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল। ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া মোলদাভিয়া ও ওয়ালাচিয়া দখল করলে তৎকালীন ইউরোপের বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলি, যেমন: অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ভিয়েনাতে মিলিত হয়ে রাশিয়ার কাছে ওই দুটি অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। রাশিয়া এই দাবি অগ্রাহ্য করলে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ শুরু হয় (মার্চ, ১৮৫৪ খ্রি.)। ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্স ভিয়েনা প্রস্তাব নামে পরিচিত চার দফা শর্ত রাশিয়াকে দেয় (ডিসেম্বর, ১৮৫৫ খ্রি.)। যুদ্ধে পরাজিত রাশিয়া চাপে পড়ে ভিয়েনা প্রস্তাব মেনে নেয়। এই যুদ্ধে রাশিয়া শেষপর্যন্ত পরাজিত হয় এবং প্যারিসের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় (১৮৫৬ খ্রি.)।

    প্যারিসের সন্ধি

    ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের স্বাক্ষরিত প্যারিসের সন্ধির মূল শর্তগুলি ছিল- 
    • যুদ্ধের সময় কৃষ্ণসাগর ও দার্দানেলিস প্রণালী সব শক্তির কাছেই বন্ধ থাকবে; এর উপকূলে রাশিয়া বা তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করা চলবে না, কিন্তু সকল দেশের বাণিজ্য-জাহাজ এই অঞ্চলের জলপথে জাহাজ চলাচলের স্বাধীনতা পাবে। 
    • দানিয়ুব নদীতে নৌ-চলাচলের অবাধ অধিকার সকল দেশকেই সমানভাবে দেওয়া হয়। 
    • দক্ষিণ-বেসারাবিয়া তুরস্ককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, ফলে রুশ-রাজ্যসীমা দানিয়ুব অঞ্চল থেকে অপসারিত হয়। 
    • রাশিয়াকে তুরস্কের গোঁড়া খ্রিস্টানদের অভিভাবকত্ব ত্যাগ করতে হয়। 
    • তুরস্ক তার সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত সমস্ত প্রজাবর্গের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে মনোযোগ দেবার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং বেসারাবিয়ার স্বায়ত্তশাসন স্বীকার করে নেয়।

    মূল্যায়ন

    প্যারিসের সন্ধি বল্কান সমস্যার প্রকৃত সমাধান করতে পারেনি :

    তুরস্ক সাম্রাজ্য রক্ষা : তুরস্ক সাম্রাজ্যের পতন কিছুকালের জন্য স্থগিত থাকলে তুরস্ক খ্রিস্টান প্রজাদের মঙ্গল বিধানের জন্য যে-সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পালন করেনি।

    ইউরোপীয় শক্তিবর্গের হস্তক্ষেপ:
    কালক্রমে বল্কান অঞ্চলে তুরস্কের কুশাসন পুনরায় সেখানে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এবং ইউরোপীয় শক্তিবর্গের হস্তক্ষেপ অপরিহার্য হয়ে ওঠে।

    Leave a Comment