পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ পর্যালোচনা করো। মন্বন্তর পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা আলোচনা করো

পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ পর্যালোচনা করো। মন্বন্তর পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা আলোচনা করো

পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ পর্যালোচনা করো। মন্বন্তর পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা আলোচনা করো

পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ পর্যালোচনা করো। মন্বন্তর পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা আলোচনা করো।

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ তথা ১৩৫০ বঙ্গাব্দে বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, যাতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এই ঘটনা পঞ্চাশের মন্বন্তর নামে পরিচিত।

পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণসমূহ

(ক) উৎপাদন হ্রাস

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ব্যাপক ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির প্রকোপে বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজ ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষিজ উৎপাদন হ্রাস পায় -এটি ছিল পঞ্চাশের মন্বন্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

(খ) খাদ্যসংকট

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে বার্মার উপর জাপান তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করলে বার্মা থেকে বাংলাদেশে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। অসাধু ব্যবসায়ীরা এসময় লাভের আশায় খাদ্য মজুত করতে থাকলে কৃত্রিম খাদ্যসংকট সৃষ্টি হয়।

(গ) পরিবহণ ব্যবস্থার সমস্যা

ব্রিটিশ সরকার জাপানি সৈন্যবাহিনীর মধ্যে খাদ্যসংকট তৈরি করার উদ্দেশ্যে ২৬ হাজারের বেশি নৌকা নষ্ট করে দেয়। ফলে খাদ্য পরিবহণের সমস্যা এবং খাদ্যের অভাব চরমে ওঠে।

(ঘ) সরকারি নীতি

পঞ্চাশের মন্বন্তরের পিছনে বিভিন্ন সরকারি নীতিও দায়ী ছিল, যেমন- ব্রিটিশ সরকারের পোড়ামাটি নীতি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল কর্তৃক বাংলায় খাদ্য রফতানির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রভৃতি।

৫০-এর মন্বন্তরের পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা

পঞ্চাশের মন্বন্তরে ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক-দুই দিক থেকে সংকটের সম্মুখীন হয়। সংকট নিয়ন্ত্রর জন্য ব্রিটিশ সরকার বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে, যেমন-

ইতিবাচক দিক

  • বাংলার কয়েকটি শহরে খাদ্যসংকটের সময় ব্রিটিশ সরকার রেশনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে লঙ্গরখানা চালু করে।
  • ভারতের বড়োলাট লর্ড ওয়াভেল দুর্ভিক্ষপীড়িতদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

নেতিবাচক দিক

  • পঞ্চাশের মন্বন্তরে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ভারতে খাদ্য রফতানি করতে চাইলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের অনিচ্ছায় তা সম্ভব হয়নি।
  • ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে চরম দুর্ভিক্ষ ও মৃত্যু শুরু হলেও ব্রিটিশ সরকার বাংলা থেকে চাল সংগ্রহ করে মজুত করে। ইরান, ইরাকে যুদ্ধরত সৈনিকদের জন্য এই চাল পাঠানো হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষের খাদ্যের ঘাটতি দেখা দেয় ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন – স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ও শেখ মুজিবর রহমানের ভূমিকা আলোচনা করো

FAQs on – পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ পর্যালোচনা করো। মন্বন্তর পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা আলোচনা করো

পঞ্চাশের মন্বন্তর কী?
১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ তথা ১৩৫০ বঙ্গাব্দে বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, যাতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এই ঘটনা পঞ্চাশের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
পঞ্চাশের মন্বন্তর কবে হয়েছিল?
 
১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে।
পঞ্চাশের মন্বন্তরে কত মানুষ মারা যায়?
 
 প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়

Leave a Comment