দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন – আজকের পর্বে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন তা আলোচনা করা হল।

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন?

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল কেন

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ইউরোপের অধিকাংশ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও সেগুলির ভিত ছিল খুবই নড়বড়ে। তাই পরিস্থিতির সাপেক্ষে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

    গণতন্ত্র বিপর্যয়ের কারণ

    অভিজ্ঞতার অভাব

    যেসব দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অভাবের কারণে ইউরোপে গণতন্ত্রের বিপর্যয় ঘটাই স্বাভাবিক।

    সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতা

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ইউরোপে যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা সমাধানে ব্যর্থ হওয়ার কারণে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ গণতন্ত্রের ওপর আস্থা হারায়।

    কাঠামোগত ত্রুটি

    গণতন্ত্রের কাঠামোগত ত্রুটির মধ্যেই তার বিপর্যয়ের বীজ নিহিত ছিল। সংবিধানের নিরাপত্তার জন্য প্রেসিডেন্টের হাতে জরুরি ক্ষমতা থাকে। এই ব্যবস্থার অপপ্রয়োগ একনায়কতন্ত্রের পথ পরিস্কার করে দেয়-যা জার্মানিতে দেখা গিয়েছিল।

    অর্থনৈতিক মন্দা

    ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মহামন্দার কবলে পড়ে ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনীতি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। মুদ্রাস্ফীতি ও জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি জনিত অর্থনৈতিক বিপর্যয় গণতান্ত্রিক দেশগুলি ঠেকাতে পারেনি। শীল অকে

    ফ্যাসিবাদ ও নাতসিবাদের উত্থান

    নবগঠিত গণতান্ত্রিক দেশগুলি বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায় তখন ব্যক্তি বিশেষের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। ফলে সূচনা হয় একনায়কতন্ত্রের। এভাবে ইটালিতে ফ্যাসিবাদ ও জার্মানিতে নাতসিবাদের সূচনা হয় এবং মানুষকে গণতন্ত্র বিমুখ করে তোলে।

    জাতিসংঘের ব্যর্থতা

    জার্মানির অস্ত্রসজ্জা ও আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কোনো কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে জেনেভায় আহূত নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের ব্যর্থতা এবং জার্মানির লিগের সদস্যপদ ত্যাগ জার্মানিকে আগ্রাসী করে তুলেছিল।

    সুদক্ষ জননেতার অভাব

    দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তীকালে কোনো দক্ষ জননেতার আবির্ভাব ঘটেনি। যিনি নিজের কর্মক্ষমতার দ্বারা গণতন্ত্রকে শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা হিসেবে তুলে ধরতে পারেন।

    এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটে এবং একনায়কতন্ত্র ও একদলীয় শাসনব্যবস্থার সূচনা হয়। ঐতিহাসিক গ্যাথন হার্ডি এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের সড়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

    Leave a Comment