দ্বাদশ শ্রেণি দর্শন প্রথম অধ্যায় যুক্তি ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর |
যুক্তিবিজ্ঞান কাকে বলে?
যুক্তিবিজ্ঞান হল বৈধ চিন্তার নিয়মাবলি সম্পর্কীয় বিজ্ঞান। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Logic, যেটি ল্যাটিন শব্দ Logos থেকে উদ্ভূত হয়েছে। Logos-এর অর্থ চিন্তা। সুতরাং ব্যুৎপত্তিগত দিক থেকে Logic শব্দের অর্থ চিন্তা সম্পর্কীয় বিজ্ঞান।
যুক্তিবিজ্ঞান কী নিয়ে আলোচনা করে?
যুক্তিবিজ্ঞান প্রধানত এমন কতকগুলি সূত্র বা বিধি নিয়ে আলোচনা করে, যেগুলির দ্বারা বৈধ যুক্তিকে অবৈধ যুক্তি থেকে পৃথক করা যায়।
যুক্তিবিজ্ঞানের কাজ কী?
যুক্তিবিজ্ঞান অবৈধ যুক্তি থেকে বৈধ যুক্তিকে পৃথক করার পদ্ধতি ও বিধিগুলি সম্পর্কে আলোচনা করে।
তর্কবিদ্যা কী নিয়ে আলোচনা করে?
চিন্তার আদর্শ হল সত্যতা। তর্কবিদ্যা এই সত্যতা সম্বন্ধে আলোচনা করে।
তর্কবিদ্যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী?
ব্যুৎপত্তিগত অর্থে তর্কবিদ্যা হল, ভাষায় প্রকাশিত চিন্তা সম্পর্কীয় বিজ্ঞান।
তর্কবিদ্যাকে চিন্তা বা বুদ্ধির মূল নীতিসমূহের বিজ্ঞানরূপে কারা অভিহিত করেছেন?
ডেভিড হিউম এবং ইমানুয়েল কান্ট।
নীতিবিদ্যা কী নিয়ে আলোচনা করে?
আচরণের আদর্শ হল শিব বা কল্যাণ। নীতিবিদ্যা এই শিব বা কল্যাণ সম্পর্কেই আলোচনা করে।
মানুষের জীবনে তিনটি পরম আদর্শ কী কী?
মানুষের জীবনে তিনটি পরম আদর্শ হল-সত্য, শিব ও সুন্দর।
যুক্তি কাকে বলে?
যুক্তি হল বচনসমষ্টি, যেখানে একটি বচনের সত্যতা এক বা একাধিক বচনের সত্যতার উপর নির্ভর করে বলে দাবি করা হয়।
যুক্তির অবয়ব কাকে বলে?
যেসব বচন দিয়ে যুক্তি গঠিত হয়, তাদেরকে বলা হয় যুক্তির অবয়ব।
যুক্তির আকার কাকে বলে?
একাধিক বচন সংশ্লিষ্ট হয়ে যখন কোনো যুক্তি গঠন করে, তখন সেই যুক্তির গঠনবিন্যাস বা কাঠামোবিন্যাসকেই যুক্তির আকার বলা হয়।
যুক্তি কাকে বলে?
ভাষায় প্রকাশিত অনুমানকে যুক্তি বলা হয়।
অনুমান কী?
অনুমান হল একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যার সাহায্যে এক বা একাধিক জ্ঞাত সত্যের ভিত্তিতে অজ্ঞাত তথ্যকে জানা যায়।
অনুমান ও যুক্তির পার্থক্য কী?
অনুমানের ক্ষেত্রে আমরা এক বা একাধিক যুক্তিবাক্য দিয়ে শুরু করি এবং তারপর ওইসব যুক্তিবাক্য দ্বারা সমর্থিত হয়ে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হই।
অন্যদিকে যুক্তির ক্ষেত্রে আমরা সিদ্ধান্ত দিয়ে তর্ক শুরু করি এবং সিদ্ধান্তটি যেসব যুক্তিবাক্যের দ্বারা সমর্থিত হতে পারে সেগুলিকে খুঁজে বের করি।
অনুমানের সঙ্গে যুক্তির সম্পর্ক কী?
অনুমান একটি মানসিক প্রক্রিয়া। এই অনুমানকে যখন ভাষায় প্রকাশ করা হয়, তখন তা যুক্তিতে পরিণত হয়। (১)
অনুমান ও যুক্তির মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি?
হ্যাঁ, অনুমান হল মানসিক প্রক্রিয়া এবং যুক্তি হল অনুমানের ভাষাগত রূপ।
আধুনিক যুক্তিবিজ্ঞানের জনক কে?
জর্জ বুল।
যুক্তির প্রকৃত পরিচয় কীভাবে লাভ করা যায়?
যুক্তির আকারের মাধ্যমে।
যুক্তির প্রতীকী বা সাংকেতিক কাঠামোকে কী বলে?
যুক্তির আকার।
প্রতিটি যুক্তি কী কী অংশ নিয়ে গঠিত হয়?
প্রতিটি যুক্তি দুটি অংশ নিয়ে গঠিত হয়- (১) হেতুবাক্য বা আশ্রয়বাক্য এবং (২) সিদ্ধান্ত।
হেতুবাক্য কাকে বলে?
যে বাক্যের সাহায্যে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে হেতুবাক্য বলা হয়।
হেতুবাক্যের অপর নাম কী?
হেতুবাক্যকে যুক্তিবাক্য বা আশ্রয়বাক্য বলা হয়।
যুক্তির আশ্রয়বাক্যকে কী বলা হয়?
যুক্তির আশ্রয়বাক্যকে হেতুবাক্য বা যুক্তিবাক্য বলা হয়।
যুক্তিতে যে বচনের সত্যতা দাবি করা হয়, তাকে কী বলা হয়?
যুক্তিতে যে বচনের সত্যতা দাবি করা হয়, তাকে সিদ্ধান্ত বলা হয়।
যুক্তিবিজ্ঞানে ‘সুতরাং’ শব্দটি কীসের নির্দেশক?
যুক্তির সিদ্ধান্তের নির্দেশক।
সিদ্ধান্ত বলতে কী বোঝো?
কোনো যুক্তিতে হেতুবাক্যের সাহায্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে সিদ্ধান্ত বলা হয়। যে বাক্যকে প্রমাণ বা
যুক্তির আকার বলতে কী বোঝো?
একাধিক বচনগ্রাহকের প্রতীকী কাঠামোকে যুক্তির আকার বলা হয়।
নিবেশন দৃষ্টান্ত কাকে বলে?
যুক্তির আকারে বিষয়বস্তুর কাঠামোবিন্যাসকে নিবেশন দৃষ্টান্ত বলা হয়।
অবধারণ কাকে বলে?
একাধিক ধারণার সমন্বয় ঘটলে অবধারণ তৈরি হয়।
বচনসমষ্টি হলেই কি তাকে যুক্তি বলা যায়?
না। বচনসমষ্টি হলেই তাকে যুক্তি বলা যাবে না, যদি না সেই বচনগুলি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত হয়।
যুক্তি গঠনের জন্য কমপক্ষে ক-টি বাক্যের প্রয়োজন?
দুটি- (১) যুক্তিবাক্য এবং (২) সিদ্ধান্ত।
যুক্তিবাক্যের সঙ্গে সিদ্ধান্তের সম্পর্ক কীভাবে স্থাপিত হয়?
দুই ভাবে- (১) মিশ্র বচনের অঙ্গবাক্যের সাহায্যে, (২) সংশ্লিষ্ট বচনের মধ্যে উপস্থিত কিছু পদের সাহায্যে।
যুক্তি কখন বৈধ হয়?
যখন কোনো যুক্তির সিদ্ধান্ত যুক্তিপদ্ধতির নিয়ম অনুসরণ করে হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়, তখন যুক্তিটি বৈধ হয়।
যুক্তি কখন অবৈধ হয়?
কোনো যুক্তির সিদ্ধান্ত যখন হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না, তখন যুক্তি অবৈধ হয়।
যুক্তির বৈধতা কীসের উপর নির্ভর করে?
যুক্তির বৈধতা যুক্তির আকারের উপর নির্ভর করে।
বৈধতা কার ধর্ম?
বৈধতা হল যুক্তির অন্যতম বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম।
যুক্তির বৈধতা বলতে কী বোঝো?
যুক্তির বৈধতা বলতে বোঝায় উক্ত যুক্তির সিদ্ধান্তটির যুক্তিপদ্ধতির নিয়ম অনুসরণ করে হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হওয়া।
যুক্তির আকারগত বৈধতা বলতে কী বোঝো?
যুক্তির আকারগত বৈধতা বলতে বোঝায় যে, সেই আকারের অন্তর্গত সব যুক্তিই বৈধ।/যুক্তির আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা না হওয়াকেই যুক্তির আকারগত বৈধতা বলা হয়।
বৈধ যুক্তি বলতে কী বোঝো?
বৈধ যুক্তি বলতে বোঝায় সেই যুক্তিকে যার সিদ্ধান্তটি যুক্তি পদ্ধতির নিয়ম অনুসরণ করে হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসত হয়।
কোন যুক্তি বৈধ বা অবৈধ হয়?
অবরোহ যুক্তি বৈধ বা অবৈধ হয়।
অবৈধ যুক্তির সিদ্ধান্ত কী ধরনের হয়?
অবৈধ যুক্তির সিদ্ধান্ত সত্য হতে পারে, আবার মিথ্যাও হতে পারে।
যুক্তির উপাদান ও যুক্তির আকারের মধ্যে কী পার্থক্য থাকে?
যুক্তির উপাদান বলতে বোঝায় তার আলোচ্য বিষয়, অর্থাৎ যে বিষয় নিয়ে যুক্তি আলোচনা করে সেই বিষয়কে। অন্যদিকে যুক্তির আকার বলতে বোঝায় যুক্তির গঠনবিন্যাস বা তার কাঠামোকে।
যুক্তির সত্যতা বলতে কী বোঝো?
যুক্তির সত্যতা বলতে বোঝায় যুক্তির অন্তর্গত বচনগুলির সত্য বা মিথ্যাকে। বৈধ যুক্তির হেতুবাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সত্য হয়, আর হেতুবাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা হলে যুক্তি অবৈধ হয়।
যুক্তির বস্তুগত সত্যতা বলতে কী বোঝো?
যুক্তির বস্তুগত সত্যতা বলতে বোঝায় যুক্তির বিষয়বস্তুর সত্যতা বা যুক্তির অন্তর্গত বচনগুলির সত্য-মিথ্যাকে।
সত্যতা কার উপর প্রযোজ্য হয়?
সত্যতা হল বচনের ধর্ম এবং তা কেবল বচনের উপরই প্রযোজ্য হয়।
যুক্তির হেতুবাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত কী হবে?
সিদ্ধান্ত সত্য অথবা মিথ্যা হবে।
বৈধ যুক্তির হেতুবাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত কী হবে?
সিদ্ধান্ত অবশ্যই সত্য হবে, মিথ্যা হতে পারে না।
সত্যতা ও বৈধতার মধ্যে সম্পর্ক কী?
অবরোহ যুক্তির হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্ত উভয়ই সত্য হলে যুক্তি বৈধ হয়, আর হেতুবাক্য সত্য ও সিদ্ধান্ত মিথ্যা হলে যুক্তি অবৈধ হয়।
সত্যতা ও বৈধতার একটি পার্থক্য লেখো।
‘সত্যতা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয় বচনের ক্ষেত্রে এবং ‘বৈধতা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয় যুক্তির ক্ষেত্রে।
যুক্তির বৈধতার সঙ্গে সত্যতার কী সম্বন্ধ রয়েছে?
বৈধ যুক্তির হেতুবাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত কখনোই মিথ্যা হবে।
বৈধতা ও সত্যতার মধ্যে প্রভেদ কোথায়?
বৈধতা হল যুক্তির আকারের ধর্ম, সত্যতা হল বাস্তবানুগত্য।
বৈধ যুক্তির ভিত্তি কী?
প্রসক্তি সম্বন্ধ।
প্রসক্তি সম্বন্ধ কী?
বৈধ অবরোহ যুক্তির আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে এমন সম্বন্ধ থাকে যে, এর আশ্রয়বাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত মিথ্যা হতে পারে না; এই সম্বন্ধকে প্রসক্তি সম্বন্ধ বলে। অন্যদিকে, যে অবরোহ যুক্তির আশ্রয়বাক্য সত্য ও সিদ্ধান্ত মিথ্যা, সেই অবরোহ যুক্তি অবৈধ হয়।
যুক্তিকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
যুক্তিকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় – (১) অবরোহ যুক্তি এবং (২) আরোহ যুক্তি।
অবরোহ যুক্তির হেতুবাক্য কী ধরনের হয়?
অবরোহ যুক্তির হেতুবাক্যটি সর্বদা সিদ্ধান্তের সমব্যাপক হয় অথবা সিদ্ধান্তের তুলনায় অধিক ব্যাপক হয়।
আরোহ যুক্তির হেতুবাক্য সত্য হলে সিদ্ধান্ত কী হবে?
সিদ্ধান্ত সত্য অথবা মিথ্যা হতে পারে।
আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
আরোহ যুক্তিতে কয়েকটি বিশেষ বস্তু বা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
আরোহ যুক্তিটির সিদ্ধান্ত কোন্ বচন হয়?
আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত সর্বদাই সার্বিক সংশ্লেষক বচন হয়।
কোন যুক্তির সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য, সুনিশ্চিত নয়?
আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি সর্বদাই সম্ভাব্য হয়, সুনিশ্চিত নয়।
অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি কীভাবে নিঃসৃত হয়?
অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি এক বা একাধিক হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়।
অবরোহ অনুমান ও আরোেহ অনুমানের (যুক্তি) পার্থক্য লেখো।
অবরোহ ও আরোহ অনুমানের পার্থক্যগুলি হল-
(১) অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়, কিন্তু আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না।
(২) অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত হেতুবাক্যের চেয়ে অধিক ব্যাপক হয় না। কিন্তু আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত হেতুবাক্যের তুলনায় অধিক ব্যাপক হয়।
কোন্ যুক্তিতে সিদ্ধান্ত আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়?
অবরোহ যুক্তিতে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়।
অবরোহ যুক্তি কাকে বলে?
অবরোহ যুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
অবরোহ যুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
(১) অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়।
(২) অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি কখনোই হেতুবাক্যের চেয়ে অধিক ব্যাপক হয় না।
আরোহ যুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
আরোহ যুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
(১) আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি সর্বদা একাধিক হেতুবাক্যের ভিত্তিতে গঠিত হয়।
(২) আরোহ যুক্তিতে অভিজ্ঞতার সাহায্যে হেতুবাক্যের বস্তুগত সত্যতা বিচার করা হয়।
আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত কেন সম্ভাব্য হয়?
আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত হেতুবাক্যের তুলনায় অধিক ব্যাপক হওয়ায় সিদ্ধান্তটি সম্ভাব্য হয়।
আরোহ যুক্তির সত্যতা কীভাবে বিচার করা হয়?
আরোহ যুক্তির বস্তুগত সত্যতা বিচার করা হয়।
অবরোহ ও আরোহ পদ্ধতি কীভাবে সম্পর্কিত?
আরোহ পদ্ধতির মাধ্যমে সার্বিক নিয়ম আবিষ্কার সম্ভব হয়, আর অবরোহ পদ্ধতির মাধ্যমে তার প্রমাণ বা প্রতিষ্ঠা হয়।
অবরোহ ও আরোহ যুক্তির একটি সাদৃশ্য লেখো।
উভয় যুক্তিরই লক্ষ্য হল সাধারণ নিয়ম আবিষ্কার ও তাকে প্রমাণ করা।
অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত যদি আশ্রয়বাক্যের চেয়ে অধিক ব্যাপক হয়, তাহলে কী হবে?
সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য দ্বারা সমর্থিত হতে পারবে না এবং সিদ্ধান্তটি সম্ভাব্যরূপে পরিগণিত হবে।
অবরোহ যুক্তি কখন বৈধ হয়?
অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি যখন আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়, তখন যুক্তিটি বৈধ হয়।
অমাধ্যম অবরোহ যুক্তি কাকে বলে?
যে অবরোহ যুক্তিতে সিদ্ধান্তটি একটিমাত্র হেতুবাক্য থেকে অর্থের পরিবর্তন না করে বিধিসম্মতভাবে সরাসরি নিঃসৃত হয়, তাকে অমাধ্যম অবরোহ যুক্তি বলে। যেমন- আবর্তন ও বিবর্তন।
মাধ্যম অবরোহ যুক্তি কাকে বলে?
যে অবরোহ যুক্তিতে দুটি হেতুবাক্যকে সংযুক্ত করে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়, তাকে মাধ্যম অবরোহ যুক্তি বলা হয়। যেমন- প্রাকল্পিক ন্যায়, বৈকল্পিক ন্যায়।
বেইন-এর মতে, আরোেহ অনুমানের প্রধান লক্ষণ কী?
আরোহ সংক্রান্ত লাফ।
‘আরোহমূলক লাফ’ কাকে বলে?
আরোহ অনুমানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ থেকে সামান্যে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে যুক্তিবিজ্ঞানী বেইন ‘আরোহমূলক লাফ’ বলেছেন।
আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি কোন্ বচন হয়?
সার্বিক সংশ্লেষক বচন।
বাক্যনির্ভর অবরোহ অনুমান কাকে বলে?
যে অবরোহ অনুমানে যুক্তিবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্পর্কটি কিছু বাক্য বা অঙ্গবাক্যনির্ভর হয়, তাকে বাক্যনির্ভর অবরোহ অনুমান বলা হয়।
পদনির্ভর অবরোহ অনুমান কাকে বলে?
যে অবরোহ অনুমানে যুক্তিবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্পর্কটি যুক্তিবাক্য ও সিদ্ধান্তবাক্যের অন্তর্গত কিছু পদনির্ভর হয়, তাকে পদনির্ভর অবরোহ অনুমান বলা হয়।
আকারনিষ্ঠ অবরোহ অনুমান কাকে বলে?
আকার-নিরপেক্ষ অবরোহ অনুমান কাকে বলে?
যে অবরোহ অনুমানের বৈধতা আকারের পরিবর্তে ভাষাগত অর্থের উপর নির্ভর করে, তাকে আকার-নিরপেক্ষ অবরোহ অনুমান বলা হয়।
স্বতঃসত্য বাক্য কাকে বলে?
যে সকল বাক্যের গঠন এমনই যে, বাক্যটি সবসময়েই সত্য, তাকে স্বতঃসত্য বাক্য বলা হয়।
স্বতঃমিথ্যা বাক্য কাকে বলে?
যে সকল বাক্যের গঠন এমনই যে, বাক্যটি সবসময়ই মিথ্যা, তাকে স্বতঃমিথ্যা বাক্য বলে।
আপতিক বাক্য কাকে বলে?
যে সকল বাক্যের গঠন এমনই যে, সেটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সত্য আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মিথ্যা হতে পারে, তাকে আপতিক বাক্য বলে।
একটি স্বতঃসত্য বাক্যের উদাহরণ দাও।
সূর্য হল একটি নক্ষত্র।
একটি স্বতঃমিথ্যা বাক্যের উদাহরণ দাও।
সকল লাল জবা হয় কালো।
একটি আপতিক বাক্যের উদাহরণ দাও।
আকাশে মেঘ করলে বৃষ্টি হয়।
আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয় কেন?
কারণ, সিদ্ধান্তের বক্তব্য যুক্তিবাক্যকে অতিক্রম করে যায়।
অবরোহ যুক্তির প্রসক্তি সম্বন্ধ কী?
অবরোহ যুক্তির হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে যে সম্বন্ধ, তা প্রসক্তি সম্বন্ধ নামে খ্যাত।
নিরপেক্ষ যুক্তি কাকে বলে?
যে অবরোহ যুক্তির হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের সব অবয়বগুলিই নিরপেক্ষ বচন, তাকে নিরপেক্ষ যুক্তি বলে। যেমন- ন্যায় অনুমান।
নিরপেক্ষ যুক্তি কত প্রকারের হয়?
নিরপেক্ষ যুক্তি দু-প্রকারের হয়- (১) মাধ্যম অবরোহ যুক্তি এবং (২) অমাধ্যম অবরোহ যুক্তি।
সাপেক্ষ যুক্তি কাকে বলে?
যে অবরোহ যুক্তির অন্তত একটি অবয়ব সাপেক্ষ বচন, তাকে সাপেক্ষ যুক্তি বলে। সাপেক্ষ যুক্তিকে যৌগিক যুক্তিও বলা হয়। কারণ, সাপেক্ষ বচনমাত্রই যৌগিক বচন।
সাপেক্ষ যুক্তি কত প্রকারের হয়?
সাপেক্ষ যুক্তি দু-প্রকারের হয়- (১) প্রাকল্পিক যুক্তি এবং (২) বৈকল্পিক যুক্তি।
প্রাকল্পিক যুক্তি কাকে বলে?
যে অবরোহ যুক্তির প্রথম হেতুবাক্যটি প্রাকল্পিক বচন এবং দ্বিতীয় হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তটি নিরপেক্ষ বচন, তাকে প্রাকল্পিক যুক্তি বলা হয়।
বৈকল্পিক যুক্তি কাকে বলে?
যে অবরোহ যুক্তির প্রথম হেতুবাক্যটি বৈকল্পিক বচন এবং দ্বিতীয় হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তটি নিরপেক্ষ বচন, তাকে বৈকল্পিক যুক্তি বলা হয়।
মিশ্র যুক্তি বলতে কী বোঝায়?
যে যুক্তিতে নিরপেক্ষ ও সাপেক্ষ উভয় প্রকার অবয়বই থাকে, সেই যুক্তিকে মিশ্র যুক্তি বলে।
পর্যবেক্ষণ কাকে বলে?
অবাধ অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে উদ্দেশ্যপূর্ণ কোনো প্রত্যক্ষণকে পর্যবেক্ষণ বলা হয়।
পরীক্ষণ কাকে বলে?
সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে কোনো ঘটনার পর্যবেক্ষণ এবং নিরীক্ষণ প্রক্রিয়াকেই পরীক্ষণ বলা হয়।
প্রকৃতির একরূপতা নিয়ম বলতে কী বোঝায়?
প্রকৃতির একরূপতার নিয়ম বলতে বোঝায় যে, প্রকৃতি সর্বদা একই পরিবেশে একইরকম আচরণ করে।
কার্যকারণ নিয়ম বলতে কী বোঝায়?
কার্যকারণ নিয়ম বলতে বোঝায় সেই নিয়মকে, যাতে বলা হয় জগতে প্রতিটি কার্যের নির্দিষ্ট কারণ আছে এবং কারণ না ঘটলে কার্য সংঘটিত হয় না।
তর্কবিদ্যাকে ‘সর্বশাস্ত্রের প্রদীপ’ কে বলেছেন?
অন্নমভট্ট।