দ্বাদশ শ্রেণি ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর

সূচিপত্র

দ্বাদশ শ্রেণি ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর
দ্বাদশ শ্রেণি ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ ছোটো প্রশ্ন ও উত্তর

হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণের উদ্দেশ্য কী ছিল?

হিটলার ডানজিগ বন্দরে পৌঁছোনোর জন্য পোল্যান্ডের কাছে একটি করিডর অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ পথ দাবি করেছিলেন। পোল্যান্ড হিটলারের দাবিপূরণে অসম্মত হলে হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করেন।

‘রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষচুক্তি’ কী?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে ইটালি, জার্মানি ও জাপানের মধ্যে যে সমঝোতা চুক্তি গড়ে ওঠে, তাকে রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষচুক্তি বলা হয়।

রোম-বার্লিন-টোকিও চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

রোম-বার্লিন-টোকিও চুক্তি ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস সভাপতি কে ছিলেন?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। 

কংগ্রেসের কোন্ অধিবেশনে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানানো হয়?

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে কংগ্রেসের রামগড় অধিবেশনে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানানো হয়।

‘লিনলিথগো প্রস্তাব’ (Linlithgow Offer) বা ‘আগস্ট প্রস্তাব’ কবে ঘোষিত হয়?

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট ‘লিনলিথগো প্রস্তাব’ বা ‘আগস্ট প্রস্তাব’ ঘোষিত হয়।

ভারতের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ‘আগস্ট ঘোষণা’ বলতে কী বোঝো? অথবা, ‘লিনলিথগো প্রস্তাব’ (Linlithgow Offer) বা ‘আগস্ট প্রস্তাব কী?

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট বড়োলাট লর্ড লিনলিথগো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয়দের সমর্থনলাভ অর্থাৎ ভারতের জনসম্পদ ও অর্থসম্পদকে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে যে সুপারিশপত্র পেশ করেন, তা আগস্ট প্রস্তাব বা লিনলিথগো প্রস্তাব নামে পরিচিত। এতে বলা হয়-যুদ্ধের পর ভারতকে ডোমিনিয়নের মর্যাদা দেওয়া হবে, যুদ্ধশেষে ভারতীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে সংবিধান রচনার জন্য একটি সমিতি গঠন করা হবে এবং বড়োলাটের শাসন পরিষদে অধিক সংখ্যক ভারতীয় নিয়োগ করা হবে।

‘লাহোর প্রস্তাব’ কে, কবে উত্থাপন করেন এবং কে এটি রচনা করেছিলেন?

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশনে বাংলার কৃষক-প্রজা পার্টির নেতা ফজলুল হক বিখ্যাত লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই প্রস্তাবটি তৎকালীন পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী সিকন্দার হায়াত খান রচনা করেন।

মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশনের গুরুত্ব কী?

মুসলিম লিগের লাহোর অধিবেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধিবেশনেই মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান গঠনের দাবি জানানো হয়।

‘ক্রিপস দৌত্য’ বা ‘ক্রিপস মিশন’ (Cripps Mission) কী? অথবা, ক্রিপস মিশন কবে ও কী উদ্দেশ্যে ভারতে আসে?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সদস্য ও প্রখ্যাত আইনজ্ঞ স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ ভারতকে সম্ভাব্য জাপানি আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভারতীয়দের সহযোগিতা লাভ ও ভারতের রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসানের উদ্দেশ্যে ভারতে আসেন-যা ক্রিপস দৌত্য বা ক্রিপস মিশন (Cripps Mission) নামে পরিচিত।

‘ক্রিপস প্রস্তাব’ বলতে কী বোঝো?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে এবং ভারতকে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস-এর মর্যাদা প্রদানের লক্ষ্যে যে-সমস্ত প্রস্তাব পেশ করে, তা ক্রিপস প্রস্তাব নামে পরিচিত।

ক্রিপস মিশনের প্রস্তাবে গান্ধিজি কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন? অথবা, গান্ধিজি কোন্ প্রস্তাবকে ‘ফেল পড়া ব্যাংকের চেক’ (a Post-dated cheque on a crashing bank)-এর সমতুল্য বলে অভিহিত করেছেন?

গান্ধিজি ক্রিপস প্রস্তাবকে ‘ফেল পড়া ব্যাংকের চেক’ (a Post- dated cheque on a crashing bank)-এর সমতুল্য বলে অভিহিত করেছেন।

ভারতের ইতিহাসে ‘আগস্ট আন্দোলন’ কোন্ আন্দোলনকে বলা হয়?

ভারতের ইতিহাসে ‘আগস্ট আন্দোলন’ বলা হয় ভারত ছাড়ো আন্দোলন-কে।

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের সর্বাধিনায়ক কে ছিলেন? অথবা, কারা, কখন ‘তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার’ গঠন করেছিলেন?

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের তমলুকে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠিত হয়েছিল। এই সরকারের সর্বাধিনায়ক ছিলেন বিশিষ্ট গান্ধিবাদী নেতা সতীশচন্দ্র সামন্ত। তাঁর দুই বিশিষ্ট অনুগামী অজয় মুখোপাধ্যায় ও সুশীলচন্দ্র ধাড়া এই সরকার গঠন ও পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের মহিলা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নাম কী ছিল?

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের মহিলা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নাম ছিল ভগিনী সেনা।

কোথায়, কারা সুভাষচন্দ্র বসুকে ‘নেতাজি’ অভিধায় সর্বপ্রথম ভূষিত করেছিলেন?

বার্লিনে সুভাষচন্দ্র বসুকে নেতাজি অভিধায় সর্বপ্রথম ভূষিত করেছিলেন স্বাধীন ভারতীয় লিজিয়ন (Free India Legion) সেনাদল এবং পাশাপাশি জয় হিন্দ ধ্বনিতে তারা অভিবাদনও জানায়।

‘The Indian Struggle’ -গ্রন্থটির রচয়িতা কে?

‘The Indian Struggle’ – গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।

ভারতীয় বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে রাসবিহারী বসু স্মরণীয় কেন? অথবা, রাসবিহারী বসু কে ছিলেন?

ঢাকা অনুশীলন সমিতির অন্যতম সদস্য রাসবিহারী বসু ছিলেন একজন প্রখ্যাত বিপ্লবী, যিনি ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে বড়োলাট হার্ডিঞ্জের উপর বোমানিক্ষেপের পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশব্যাপী এক ব্রিটিশবিরোধী সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন, যা ব্যর্থ হলে গ্রেফতারি এড়ানোর জন্য পি এন ঠাকুর ছদ্মনামে জাপানে চলে যান এবং জাপানের হাতে বন্দি ভারতীয় সেনাদের নিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন।

কে, কবে ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ গঠন করেন? অথবা, ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ কে, কবে ও কোথায় গঠন করেন? অথবা, ‘আই এন এ’ (INA) কী?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হাতে বন্দি ভারতীয় সেনাদের নিয়ে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে সিঙ্গাপুরে ক্যাপটেন মোহন সিং-এর উদ্যোগে রাসবিহারী বসু ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ বা ‘আই এন এ’ (Indian National Army) গঠন করেন। পরে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে INA-এর দায়িত্বভার অর্পণ করা হয় সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে।

আজাদ হিন্দ ফৌজের কয়েকজন সেনাধ্যক্ষের নাম লেখো।

আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনাধ্যক্ষদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-শাহনওয়াজ খান, গুরবক্স সিং ধিলন, প্রেম কুমার সেহগল প্রমুখ।

কার নেতৃত্বে ‘ঝাঁসি রেজিমেন্ট’ গঠিত হয়?

সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে ‘ঝাঁসি রেজিমেন্ট’ গঠিত হয়।

আজাদ হিন্দ বাহিনীর ‘ঝাঁসির রানি বিগ্রেড’-এর নেতৃত্ব কে দেন?

আজাদ হিন্দ বাহিনীর ‘ঝাঁসির রানি বিগ্রেড’-এর নেতৃত্ব দেন লক্ষ্মী স্বামীনাথন।

নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দুটির কী নামকরণ করেন?

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজো আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দুটি আজাদ হিন্দ সরকারের হাতে তুলে দিলে ৩১ ডিসেম্বর নেতাজি আন্দামানে উপস্থিত হয়ে এই দুই দ্বীপপুঞ্জের নাম রাখেন যথাক্রমে শহিদ ও স্বরাজ দ্বীপ।

সুভাষচন্দ্র বসু কাকে ‘পূর্ব এশিয়ায় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের জনক’ বলে অভিহিত করেন? 

সুভাষচন্দ্র বসু ‘পূর্ব এশিয়ায় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের জনক’ বলে অভিহিত করেন রাসবিহারী বসু-কে।

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃবৃন্দের যে বিচার হয়, তার মধ্যে যে-কোনো দুজনের নাম লেখো।

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আজাদ হিন্দ ফৌজের ২০ হাজার বন্দির মধ্যে মাত্র কয়েকশো জনের প্রকাশ্যে বিচার শুরু করে। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাপতি প্রেম কুমার সেহগল, শাহনওয়াজ খান, গুরবক্স সিং ধিলন প্রমুখ।

রশিদ আলি কে?

রশিদ আলি ছিলেন আজাদ হিন্দ বাহিনীর ক্যাপটেন।

‘রশিদ আলি দিবস’ কবে পালিত হয়েছিল? অথবা, ‘রশিদ আলি দিবস’ কী?

আজাদ হিন্দ ফৌজের বীর সেনানী ক্যাপটেন রশিদ আলিকে সামরিক আদালত ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিলে তাঁর মুক্তির দাবিতে মুসলিম লিগ ও কমিউনিস্ট দলের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় রশিদ আলি দিবস পালিত হয়।

কবে ও কোথায় নৌবিদ্রোহের সূচনা হয়? 

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি বোম্বাইয়ের ‘তলোয়ার’ নামক জাহাজে প্রথম নৌবিদ্রোহের সূচনা হয়।

কোন্ জাহাজে নৌবিদ্রোহ শুরু হয়?

ভারতীয় নৌবাহিনীতে অনুন্নতমানের খাদ্য সরবরাহ, ভারতীয়দের স্বল্প বেতন প্রদান ও ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্বেতাঙ্গ অফিসারদের বৈষম্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহারের প্রতিবাদে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি বোম্বাইয়ের নৌ-প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তলোয়ার নামক জাহাজে প্রথম নৌবিদ্রোহের সূচনা হয়।

‘সি আর ফর্মুলা’ (C R Formula) কার নামে করা হয়েছে?

সি আর ফর্মুলা-র নামকরণ করা হয়েছে চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর নামে।

কে, কবে ‘সি আর ফর্মুলা’ (C R Formula) প্রকাশ করেন? অথবা, ‘সি আর ফর্মুলা’ কী? অথবা, ‘রাজাজি ফর্মুলা’ বা ‘রাজাজি সূত্র’ কী? অথবা, সি আর ফর্মুলা বলতে কী বোঝায়?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগকে ঐক্যবদ্ধ করতে ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে (মার্চ মাসে) মাদ্রাজের কংগ্রেস নেতা চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী প্রস্তাব দেন যে, কংগ্রেস ও লিগ একত্রে আন্দোলন করবে এবং স্বাধীনতালাভের পর গণভোটের দ্বারা লিগের পৃথক রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি বিবেচিত হবে- যা রাজাজি সূত্র, রাজাজি ফর্মুলা বা সি আর ফর্মুলা নামে পরিচিত।

১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ‘সি আর ফর্মুলা’র মূল কথা কী ছিল?

১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের সি আর ফর্মুলার মূল কথা হল- মুসলিম লিগ কংগ্রেসের স্বাধীনতার দাবি মেনে নেবে এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে গণভোটের মাধ্যমে পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ইত্যাদি।

‘ওয়াভেল পরিকল্পনা’ (১৯৪৫ খ্রি.) কী ছিল?

ভারতের রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করতে ও ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রেক্ষাপট হিসেবে বড়োলাট লর্ড ওয়াভেল ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুন কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ-এর কাছে একটি পরিকল্পনা পেশ করেন, যা ওয়াভেল পরিকল্পনা নামে খ্যাত।

‘ক্যাবিনেট মিশন’ কেন ভারতে আসে?

ভারতের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিষয় আলোচনার জন্য ‘ক্যাবিনেট মিশন’ ভারতে আসে।

ক্যাবিনেট মিশনের তিন জন সদস্যের নাম লেখো। অথবা, ক্যাবিনেট মিশনের সদস্য কারা ছিলেন?

ক্যাবিনেট মিশনের তিন জন সদস্য হলেন যথাক্রমে- পেথিক লরেন্স, ⅱ স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস এবং  স্যার এ ভি আলেকজান্ডার।

ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাবে কী বলা হয়?

ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাবে বলা হয়- – ব্রিটিশ-শাসিত ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলি নিয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হবে।

নতুন সংবিধান রচিত না হওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে ইত্যাদি।

কে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম’-এর ডাক দেন? অথবা, কে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম’ (Direct Action)-এর ডাক কেন দিয়েছিলেন?

মহম্মদ আলি জিন্নাহ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট প্রত্যক্ষ সংগ্রাম-এর ডাক দেন। বড়োলাট ওয়াভেল মন্ত্রী মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী কংগ্রেসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানালে সম্ভাব্য হিন্দুপ্রাধান্য। থেকে মুক্তি ও পাকিস্তান দাবি আদায়ের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ক্ষুব্ধ জিন্নাহ প্রত্যক্ষ সংগ্রাম-এর ডাক দিয়েছিলেন।

‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’ (The Great Calcutta Killing, কলকাতা মহাহত্যাকাণ্ড) বলতে কী বোঝায়?

পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে মুসলিম লিগ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম’-এর ডাক দিলে বাংলায় লিগ প্রধানমন্ত্রী সুরাবর্দির প্রত্যক্ষ মদতে পরবর্তী চার দিন পুলিশ ও প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় রেখে কলকাতায় যে ব্যাপক দাঙ্গা, অত্যাচার, হত্যাকাণ্ড ও লুণ্ঠন চলে তাতে কয়েক হাজার নিরীহ মানুষ মারা যায়। ‘The Statesman’ পত্রিকা এই ঘটনাকে ‘The Great Calcutta Killing’ বলে বর্ণনা করে।

অন্তর্বর্তী সরকার কবে, কার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল?

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী মিশনের সুপারিশ অনুযায়ী কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

ভারতের সংবিধান সভার সভাপতি কে ছিলেন?

ভারতের সংবিধান সভার সভাপতি ছিলেন ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ। 

ভারতের সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি কে ছিলেন?

ভারতের সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি ছিলেন ড. বি আর আম্বেদকর।

‘মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা’ (Mountbatten’s Plan) কী? অথবা, ‘মাউন্টব্যাটেন রোঁয়েদাদ’ (Mountbatten Award) বলতে কী বোঝো?

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত বিভাগের পরিকল্পনা অনুমোদিত হওয়ার পর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩ জুন লর্ড মাউন্টব্যাটেন তা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণাই মাউন্টব্যাটেন রোয়েদাদ নামে পরিচিত।

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারতের ইতিহাসে কেন গুরুত্বপূর্ণ?

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারত দীর্ঘ ১৯০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অধীনতাপাশ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন ভারতরূপে আত্মপ্রকাশ করে।

পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় কে ছিলেন?

পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় ছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন।

ভারতের স্বাধীনতার সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?

ভারতের স্বাধীনতার সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ক্লিমেন্ট এটলি।

ভারত কবে প্রজাতন্ত্র হল?

ভারত ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি থেকে প্রজাতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত হয়।

ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?

ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল ছিলেন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী।

জাপান কবে মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ করেছিল?

জাপান ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে চিনের মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ করেছিল।

জাপান কেন মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ করেছিল? 

জাপানের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান, কাঁচামাল সংগ্রহ, উৎপাদিত পণ্য বিক্রির বাজার, আর্থিক গুরুত্ব প্রভৃতি একাধিক উদ্দেশ্যসাধনের জন্য জাপান মাঞ্চুরিয়া আক্রমণ করেছিল। এ ছাড়াও রুশ-জাপান যুদ্ধে লক্ষাধিক জাপানিদের নিহত হওয়ার ঘটনা মাঞ্চুরিয়া আক্রমণের প্রবণতাকে ইন্ধন জুগিয়েছিল।

‘মেইজি পুনরুত্থান’ কাকে বলে?

১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে জাপানের টোকুগাওয়া ইশিনোবুর পদত্যাগের মাধ্যমে টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং ১৪ বছর বয়সি জাপানি সম্রাট মেইজি রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষে প্রতিষ্ঠিত হন-এইভাবে জাপানে দীর্ঘ শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণার পরিবর্তে জাপানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আধুনিকতার সূচনা ঘটে-যা জাপানের ইতিহাসে মেইজি পুনরুত্থান নামে সুপরিচিত (১৮৬৮ খ্রি.)।

‘এশিয়াবাসীদের জন্য এশিয়া’ – এই স্লোগানের উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, ‘এশিয়াবাসীদের জন্য এশিয়া’-কে প্রচার করে?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের স্লোগান ছিল- এশিয়াবাসীদের জন্য এশিয়া। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল-পশ্চিমি শক্তিগুলি নয়, এশিয়ায় কর্তৃত্ব স্থাপন করবে জাপান।

‘অর্নাকা মেমোরিয়াল’ কী?

ঘোর সাম্রাজ্যবাদী জাপানি প্রধানমন্ত্রী তানাকা ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে এক স্মারকপত্রে জাপানি সম্রাট হিরোহিতো-কে পরামর্শ দেন যে, পূর্ব এশিয়ার সমস্যাসমাধানের জন্য জাপানের যুদ্ধনীতি গ্রহণ অপরিহার্য এবং মাঞ্চুরিয়া ও মঙ্গোলিয়া দখল করা প্রয়োজন। এইভাবে জাপানিদের মধ্যে উগ্র জাতীয়তাবাদের জাগরণ ঘটানোর জন্য তানাকার এই প্রচেষ্টাই তানাকা মেমোরিয়াল নামে পরিচিত।

‘বৃহত্তর পূর্ব এশীয় যুগ্ম বিকাশ’-এর তত্ত্বকার কে?

জাপান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাদের নিয়ে বৃহত্তর পূর্ব এশীয় যুগ্ম বিকাশ তত্ত্ব গঠন করে। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে টোকিওতে এর প্রথম অধিবেশন বসে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হিদেকি তোজো।

কে, কবে মার্কিন নৌ-ঘাঁটি পার্ল হারবার আক্রমণ করে?

জাপান ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর মার্কিন নৌ-ঘাঁটি পার্ল হারবার আক্রমণ করে।

জাপান কেন পার্ল হারবার আক্রমণ করেছিল?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে আমেরিকা জাপানকে যুদ্ধোপকরণ ও জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিলে জাপান ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর প্রশান্ত মহাসাগরীয় হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত মার্কিন নৌ-ঘাঁটি পার্ল হারবার আক্রমণ করে। এর দ্বারা জাপান সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

জাপানের কোন্ দুটি শহরে আমেরিকা আণবিক বোমাবর্ষণ করে?

আমেরিকা ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা ও ৯ আগস্ট নাগাসাকি শহরে আণবিক বোমাবর্ষণ করেছিল।

জেনেভা সম্মেলনে কোন্ কোন্ দেশ অংশগ্রহণ করে?

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জেনেভা সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, সোভিয়েত রাশিয়া, ফ্রান্স, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস প্রভৃতি রাষ্ট্রের বিদেশমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। 

‘ভিয়েতমিন’ (Vietminh) কী?

বিদেশি শাসনমুক্ত স্বাধীন ভিয়েতনাম গঠনের জন্য হো চি মিন ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে লিগ ফর দি ইন্ডিপেন্ডেন্স ইন ভিয়েতনাম নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন-যা সংক্ষেপে ভিয়েতমিন নামে পরিচিত। 

ভিয়েতমিন কে প্রতিষ্ঠা করেন?

ভিয়েতমিন প্রতিষ্ঠা করেন হো চি মিন।

ভিয়েতনাম কবে, কোন সম্মেলনে স্বাধীনতা লাভ করে?

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের জেনেভা সম্মেলনে ভিয়েতনাম স্বাধীনতা লাভ করে।

কোন্ বছর ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়?

ভিয়েতনাম ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়।

উত্তর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট বাহিনী কী নামে পরিচিত ছিল?

উত্তর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট বাহিনীকে বলা হত ভিয়েতমিন।

‘ভিয়েত কং’ কাকে বলে?

দক্ষিণ ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট, অকমিউনিস্ট, বৌদ্ধ সন্ন্যাসী যারা দিয়েম সরকারের বিরোধিতা করেছিল, তাদেরকে দিয়েম সরকার ভিয়েতনামী কমিউনিস্ট সংক্ষেপে ভিয়েত কং বলে অভিহিত করেছিল।

ইন্দোনেশিয়া কোন্ কোন্ দ্বীপ নিয়ে গঠিত ছিল?

ইন্দোনেশিয়া মূলত তিনটি বৃহৎ দ্বীপ- জাভা, সুমাত্রা ও বোর্নিও ছাড়াও অসংখ্য ছোটো-বড়ো দ্বীপ অর্থাৎ সর্বমোট ১৭,৫০৮টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ছিল।

ড. সুকর্ণ কে ছিলেন?

ড. সুকর্ণ ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতা এবং স্বাধীন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি।

স্বাধীন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি ও প্রথম প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?

স্বাধীন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন ড. সুকর্ণ ও প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ড. মহম্মদ হাত্তা।

Leave a Comment