দশম শ্রেণি জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয় হরমোন ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর দ্বিতীয় পর্ব |
লঘুমস্তিষ্ক (Cerebellum)-র কাজ উল্লেখ করো।
লঘুমস্তিষ্ক দেহ ভঙ্গিমা ও দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। সেরিব্রাল কর্টেক্স সহযোগে দেহের বিভিন্ন ঐচ্ছিক সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে, পেশিটানের নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজ করে।
সুষুম্নাশীর্ষক-এর কাজ লেখো।
মেডালায় উপস্থিত গ্যাসেরিয়ন স্নায়ুগ্রন্থি থেকে ix, x, xi ও xv- করোটিক স্নায়ুর উৎপত্তি হয়। হৃৎস্পন্দনের হার নিয়ন্ত্রণ, শ্বসন কেন্দ্র, বমন কেন্দ্র; পাচক রসের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ; পেরিস্টলসিস নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজ করে থাকে মেডালা।
একটি করে সংজ্ঞাবহ, চেষ্টীয় ও মিশ্র করোটিক স্নায়ুর নাম লেখো।
সংজ্ঞাবহ স্নায়ু-অলফ্যাক্টরি (1)। চেষ্টীয় স্নায়ু-অকিউলোমোটর (III)। মিশ্র স্নায়ু-ট্রাইজেমিনাল (V)।
নিউরোন ব্যাতীত নিউরোনের তুলনায় প্রায় দশ গুণ বেশি সংখ্যক স্নায়ুতন্ত্রের যে সহযোগী কোশীয় উপাদান নিউরোনের রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্য করে, স্নায়ুতন্ত্রের ফাঁকা স্থান দখল করে আগ্রাসী কোশরূপে কাজ করে; মৃত নিউরোনের জায়গা দখল করে ইত্যাদি কাজ করে থাকে তাকে নিউরোগ্লিয়া বলে। । উদাহরণ: মাইক্রোগ্লিয়া।
নিউরোগ্লিয়া কোশের কাজ উল্লেখ করো।
নিউরোগ্লিয়া কোশের কাজ:
(i) অলিগোডেনড্রোগ্লিয়া প্রকৃতির গ্লিয়াল কোশ নিউরোনের মায়োলিন আবরণ গঠন করে।
(ii) সাইক্রোগ্লিয়া আগ্রাসী কোশ রূপে কাজ করে।
(iii) অ্যাস্ট্রোসাইট নিউরোনের পুষ্টিতে সহায়তা করে।
(iv) এপেডাইমাল কোশ CNS-র কেন্দ্রীয় নালির আবরণ গঠন করে।
(v) এছাড়া নিউরোগ্লিয়া কোশ নিউরোনের ক্ষত নিরাময়ে মৃত নিউরোনের স্থান দখল করা, স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন উপাদানগুলির মাঝে Packing material হিসেবে কাজ করে থাকে।
‘কডা ইকুইনা’ কী?
সুষুম্নাকাণ্ডের প্রান্ত ভাগে ফাইলাম টারমিনেল থেকে দুপাশে নীচের দিকে কটিদেশীয় ও শ্রোণিদেশীয় যেসব স্নায়ুতন্তু ছড়িয়ে থাকে তা অনেকটা ঘোড়ার লেজের ন্যায় দেখতে হয় বলে একে ‘কডা ইকুইনা’ বলে।
সরল ও জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে?
যে সমস্ত প্রতিবর্ত ক্রিয়া কেবলমাত্র সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তাদের সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। উদাহরণ: চোখে জোরালো আলো পড়লে চোখ তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া।
যে সমস্ত প্রতিবর্ত ক্রিয়া সম্পন্ন করতে সুষুম্নাকাণ্ড ছাড়াও মস্তিষ্কের সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাদের জটিল প্রতির্বত ক্রিয়া বলে। উদাহরণ: সাইকেল চালানো, গাড়ি চালানো, ব্যাঙের শিকার করা ইত্যাদি।
চোখের প্রতিসারক মাধ্যমগুলি ক্রমানুসারে লেখো।
কনজাটিভা-কর্ণিয়া-অ্যাকুয়াস হিউমর-লেন্স-ভিট্রিয়াস হিউমর।
রেটিনায় উপস্থিত আলোকগ্রাহী কোশ ও রঞ্জকের নাম লেখো।
রেটিনায় দুপ্রকার আলোকগ্রাহী কোশ থাকে যথা-রড কোশ ও কোন কোশ। রড কোশে রোডোপসিন রঞ্জক যা মৃদু আলোয় দেখতে সাহায্য করে। শাঙ্কবাকার কোন কোশে সায়ানোপসিন রঞ্জক বর্ণ চিনতে ও আয়োডোপসিন রঞ্জক উজ্জ্বল আলোয় দেখতে সাহায্য করে।
পীত বিন্দু (Yellow spot) ও ম্যাকুলা লুটিয়া কী?
তারারন্দ্রের বিপরীতে সরলরৈখিক ভাবে রেটিনায় যে হলুদ বর্ণের বিন্দুটি স্থান দেখা যায় তাকে পীত বিন্দু বলে।
এর কেন্দ্র স্থলে সামান্য অবতলাকৃতি যে খাঁজে কেবলমাত্র কোন কোশ বর্তমান তাকে ম্যাকুলা লুটিয়া বলে।
অন্ধ বিন্দু (Blind spot) কী?
পীত বিন্দুর নীচে রেটিনার যে অংশ থেকে অপটিক স্নায়ু তৈরি হয় তাকে অন্ধ বিন্দু বলা হয়। এরূপ নামকরণের কারণ হল এই অংশে কোনো প্রকার রঞ্জক থাকে না তাই অন্ধ বিন্দুতে বস্তুর কোনো প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় না।
কনজাংটিভাইটিস কী?
কর্ণিয়ায় উপরিস্থিত যে স্বচ্ছ আবরণ তাকে কনজাংটিভা বলে। এই কনজাংটিভার প্রদাহকে কনজাংটিভাইটিস বলে। সাধারণত ঘর্ষণ জনিত কারণে ভাইরাসের আক্রমণে এই রকম রোগ হয়। এই রোগে চোখ লাল হয়, ফুলে ওঠে ও অনবরত অশ্রু ক্ষরণ হতে থাকে। চোখে ময়লা বা পিছুটি জমে গিয়ে চোখ খুলতে অসুবিধাও হতে পারে।
বর্ণান্ধতা কাকে বলে?
মানুষের চোখের রেটিনাতে উপস্থিত কোন কোশে তিন প্রকার রঞ্জক থাকে যথা-সায়ানোলেব, ক্লোরোলেব ও এরাইথ্রোলেব যারা যথাক্রমে নীল, সবুজ ও লাল এই তিনটি মুখ্য বর্ণ চিনতে সাহায্য করে। এগুলি আবার X ক্রোমোজোম ও 7নং অটোজোমে উপস্থিত জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই জিনগুলির নিষ্ক্রিয়তার কারণে মানুষ উপরিউক্ত বর্ণগুলি চিনতে পারে না। এই বংশগত রোগটিকে বর্ণান্ধতা বলা হয়।