ট্রপিক চলন কাকে বলে? চিত্র ও উদাহরণের সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার ট্রপিক চলনের ব্যাখ্যা করো

ট্রপিক চলন কাকে বলে? চিত্র ও উদাহরণের সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার ট্রপিক চলনের ব্যাখ্যা করো
ট্রপিক চলন কাকে বলে? চিত্র ও উদাহরণের সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার ট্রপিক চলনের ব্যাখ্যা করো।
সংজ্ঞা: উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের উৎসের গতিপথ অনুসারে হয়, তখন তাকে ট্রপিক চলন বলে।

ট্রপিক চলনের প্রকারভেদ

উদ্ভিদের প্রধান তিনটি ট্রপিক চলন হল-ফোটোট্রপিক, জিওট্রপিক ও হাইড্রোট্রপিক চলন।

ফোটোট্রপিক চলন

উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন আলোক উৎসের দিকে বা আলোক উৎসের গতিপথ অনুসারে হয়, তখন তাকে ফোটোট্রপিক চলন বা আলোকবৃত্তি চলন বলে।

উদ্ভিদের বিটপ অংশ আলোকরশ্মির সঙ্গে সমান্তরালভাবে অগ্রসর হয় তাই উদ্ভিদের বিটপকে আলোক অনুকূলবর্তী বলে। অপরপক্ষে, উদ্ভিদের মূল আলোক উৎসের বিপরীত দিকে হওয়ায় মূলকে আলোক প্রতিকূলবর্তী বলে।

উদাহরণ: উদ্ভিদের বিটপের আলোর দিকে অগ্রসর হওয়া এইপ্রকার চলন। একটি অন্ধকার ঘরের জানলার পাশে টেবিলের ওপর একটি সতেজ চারাগাছ রেখে জানালার একটি পাল্লা খুলে রাখলে কয়েকদিন পর উদ্ভিদের কাণ্ডের শাখাপ্রশাখা ক্রমশ খোলা জানলার দিকে বেঁকে বৃদ্ধি পেতে দেখা যাবে। সুতরাং উদ্ভিদের বিটপ অংশের চলন আলোকবর্তী।

জিওট্রপিক চলন

উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন অভিকর্ষের গতিপথ অনুসারে হয়, তখন সেইপ্রকার চলনকে জিওট্রপিক চলন বা অভিকর্ষবৃত্তি বলে।

উদাহরণ ঃউদ্ভিদের মূলের অভিকর্ষের টানে পৃথিবীর ভারকেন্দ্রের দিকে চলন। উদ্ভিদের মূলের চলন অভিকর্ষের দিকে হওয়ায় মূলের চলন অভিকর্ষজ অনুকূলবর্তী এবং কাণ্ডের চলন অভিকর্ষের বিপরীতে হওয়ায় কাণ্ডের চলন অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী।

একটি ভিজে ব্লটিং পেপারের ওপরে একটি অঙ্কুরিত ছোলাবীজকে ভ্রূণমূল ও ভ্রূণমুকুলসহ পিনের সাহায্যে অনুভূমিকভাবে আটকে একটি অন্ধকার স্থানে খাড়াভাবে রাখা হল। চার-পাঁচ দিন পর পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে ভ্রূণমূলটি নীচের দিকে এবং ভ্রূণমুকুলটি ওপরের দিকে বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং উদ্ভিদের মূলের চলন অভিকর্ষবর্তী।

হাইড্রোট্রপিক চলন

উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন জলের উৎসের গতিপথ অনুসারে হয়, তখন সেইপ্রকার চলনকে হাইড্রোট্রপিক চলন বা জলবৃত্তি বলে।

উদাহরণ: উদ্ভিদের মূলের জলের উৎসের দিকে গমন এইপ্রকারের চলন। উদ্ভিদের মূল জলের উৎসের দিকে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্ভিদের মূলের চলন জল অনুকূলবর্তী এবং কাণ্ডের বৃদ্ধি জলের উৎসের বিপরীত দিকে হওয়ায় কাণ্ডের চলন জল প্রতিকূলবর্তী।

একটি চালুনির মধ্যে ভিজে কাঠের গুঁড়ো রেখে তার মধ্যে কয়েকটি অঙ্কুরিত ছোলাবীজ রেখে চালুনিটি ঝুলিয়ে রেখে দেওয়া হল। কয়েকদিন পর দেখা যাবে যে বীজের ভ্রূণমুলগুলি চালুনির ছিদ্র দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে পুনরায় বেঁকে চালুনির মধ্যে প্রবেশ করেছে। কারণ ভূণমূলগুলি প্রথমে অভিকর্ষের টানে বাইরে ঝুলছিল কিন্তু জল পাওয়ার জন্য পুনরায় চালুনির মধ্যে প্রবেশ করেছে, সুতরাং উদ্ভিদের মূলের চলন জল অনুকূলবর্তী।

Leave a Comment