![]() |
| জীববিদ্যা (Biology) পাঠের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো। |
জীববিদ্যা পাঠের প্রয়োজনীয়তা (Importance of the study of Biology)
(i) খাদ্য উৎপাদন: মানুষসহ সব প্রাণীরই অস্তিত্ব খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে আছে। আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু যেমন- শর্করা, শ্বেতসার এবং প্রোটিন সবই আমরা উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি। বর্তমানে জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের জোগান দেওয়ার জন্য বৈজ্ঞানিক প্রথায় যে ফসল উৎপাদন, মাশরুম চাষ, অধিক ফলনশীল শস্যের চাষ সম্ভব হয়েছে তা উদ্ভিদবিদ্যা পাঠের ফলেই সম্ভব হয়েছে। মানুষসহ অন্যান্য পশুদের খাদ্যের জন্য শৈবাল উলভা, গ্রাসিলারিয়া সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(ii) স্বাস্থ্য রক্ষা : জীবদেহ একাধিক কোশের সমন্বয়ে গঠিত। এ ছাড়া জীবদেহের গঠনে সাহায্যকারী কলা, অঙ্গ ও তন্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারি জীববিদ্যা পাঠের মাধ্যমে।
বর্তমানে পরিবেশদূষণজনিত কারণে ও নানা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে নানাবিধ রোগ মানবদেহকে আক্রমণ করে চলেছে। জীবনবিজ্ঞান শিক্ষার ফলে এইসব নানাবিধ রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে, ফলে এখন কোনো রোগ মহামারির আকার নিতে পারে না। উদ্ভিদবিদ্যা পাঠের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি পানীয় জলাধারগুলিতে অবস্থিত অল্প পরিমাণ শৈবাল জল পরিশোধনে সাহায্য করে।
(iii) পরিধেয় উৎপাদন: জীববিজ্ঞানের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমরা বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর নাম জানতে পারি যার থেকে মানুষের পরিধেয় অর্থাৎ, বস্ত্র উৎপাদন সম্ভব হয়। পাট, তুলোর চাষ, এবং এদের উৎপাদন, ভেড়া পালন করে পশম উৎপাদন সবই জীববিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।
(iv) প্রাকৃতিক দুর্যোগ: জীববিদ্যা পাঠের মাধ্যমে পরিবেশে উদ্ভিদের অবদান অর্থাৎ, বনজঙ্গলের প্রভাব মানবজীবনে কতখানি তা জানা যায়। অত্যধিক বনজঙ্গলের ধ্বংসের পরিণাম যে মানবজাতির ধ্বংসের কারণ হতে পারে তা পরিষ্কার বোঝা সম্ভব হয়।
(v) পরিবেশদূষণ: পৃথিবীতে দূষণের উৎস ও তার ফলাফল সম্পর্কে জানতে জীববিদ্যা পাঠের প্রয়োজন হয়।
(vi) সংরক্ষণ: জীববিদ্যা পাঠ মানবজাতিকে প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও তার সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতন করে।
(vii) জনবিস্ফোরণ রোধ: জনসংখ্যা বা পপুলেশন বৃদ্ধি প্রকৃতি তথা পৃথিবীর উপর যে সংকট ডেকে আনতে পারে সেটা আমরা জীববিজ্ঞানের জ্ঞান অর্জন করেই জানতে পারি। মানুষের প্রজননতন্ত্রের গঠন, শুক্রাণু ও ডিম্বাণু উৎপাদন ও তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করে জন্মনিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে জীববিদ্যা।
(viii) পরজীবী তত্ত্ব: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও বহু পরজীবী প্রাণী মানুষ বা উন্নত প্রাণীর দেহে বাস করে তাদের ক্ষতিসাধন করে। জীববিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমে এইসব পরজীবী প্রাণীর জীবন বৃত্তান্ত ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়। যেমন- কালাজ্বরের পরজীবী লিশম্যানিয়া (Leishmania), আমাশয় রোগের পরজীবী এন্টামিবা (Entamoeba) ইত্যাদি সম্বন্ধে ধারণা জীববিদ্যা পাঠের মাধ্যমে গড়ে ওঠে।
(ix) বন্যা ও ভূমিক্ষয় রোধ: উদ্ভিদের শিকড় মাটি আঁকড়ে ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাতে সারি সারি তাল, সুপারি ও নারকেলগাছ লাগানো থাকে। একই কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকাতে বন্যা ও ভূমিক্ষয় রোধের জন্য যে ঘাস ও গাছ লাগানো জরুরি তা জীববিদ্যা পাঠের মাধ্যমেই আমরা জানতে পারি।
%20%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A4%E0%A6%BE%20%E0%A6%89%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%20%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B.jpg)