কোরিয়া যুদ্ধের (১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ) ফলাফল ও তাৎপর্য কী ছিল
কোরিয়া যুদ্ধের (১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ) ফলাফল ও তাৎপর্য কী ছিল? |
কোরিয়া যুদ্ধের (১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ) ফলাফল ও তাৎপর্য
কোরিয়া যুদ্ধের ফলাফল
- কোরিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে কোরিয়া যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। সুতরাং, উভয় কোরিয়াকেই বিভাজন মেনে নিতে হয়। কেবল কোরিয়া থেকে বিদেশি সৈন্য অপসারিত হয়েছিল।
- কোরিয়া যুদ্ধ ছিল একটি নিষ্ফল যুদ্ধ। যুদ্ধে দুই কোরিয়ারই চরম ক্ষতি হয়। এই যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা ছিল ব্যাপক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চিন ও অন্যান্য দেশের সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি মিলিয়ে প্রায় ২৬ লক্ষ মানুষ মারা যায়।
- কোরিয়া যুদ্ধে যোগ দিয়ে চিন তার সামরিক দক্ষতার প্রমাণ দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনকে দুর্বল করতে চাইলেও ব্যর্থ হয়। এই যুদ্ধের সূত্রে সোভিয়েত রাশিয়া ও চিন পরস্পর পরস্পরের কাছাকাছি আসে।
গুরুত্ব / তাৎপর্য
ঠান্ডা লড়াইয়ের পরিধি বৃদ্ধি: এতদিন পর্যন্ত ঠান্ডা লড়াইয়ের রাজনীতি মূলত ইউরোপ মহাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোরিয়া যুদ্ধের ফলে তা এশিয়া মহাদেশেও সম্প্রসারিত হয়।
সামরিক জোট গঠন: কোরিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে চিন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধের পর থেকে ফিলিপিনস, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সামরিক জোট গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মার্কিন-জাপান সম্পর্ক: কোরিয়া যুদ্ধের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান সরকারের মধ্যে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
শান্তি প্রতিষ্ঠা: কোরিয়া যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভা ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এক প্রস্তাব পাস করে।
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মর্যাদা হ্রাস: এই যুদ্ধে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা রাষ্ট্রসংঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন স্বার্থে ব্যবহৃত হলে তার মর্যাদা হ্রাস পায়।
চিনের মর্যাদা বৃদ্ধি: কোরিয়া যুদ্ধের দ্বারা চিনের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং এশিয়া ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির কাছে চিনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।