এ সংসারে সবকিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে- কোন্ সংসারের কথা বলা হয়েছে? ওই সংসারের কথা ‘ভাত’গল্পে কতটুকু প্রকাশ পেয়েছে লেখো

এ সংসারে সবকিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে- কোন্ সংসারের কথা বলা হয়েছে? ওই সংসারের কথা ‘ভাত’গল্পে কতটুকু প্রকাশ পেয়েছে লেখো

“এ সংসারে সবকিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে”- কোন্ সংসারের কথা বলা হয়েছে? ওই সংসারের কথা 'ভাত'গল্পে কতটুকু প্রকাশ পেয়েছে লেখো

“এ সংসারে সবকিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে”- কোন্ সংসারের কথা বলা হয়েছে? ওই সংসারের কথা ‘ভাত’গল্পে কতটুকু প্রকাশ পেয়েছে লেখো।

 

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ছোটো-গল্পকার মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্প থেকে প্রদত্ত উদ্ধৃতিতে যে সংসারের কথা বলা হয়েছে, লেখিকা সেই সংসারকে বড়োবাড়ি বলে উল্লেখ করেছেন।

গল্পে উল্লিখিত পরিবারটি কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত একান্নবর্তী পরিবার। বাড়ির কর্তা বিরাশি বছরের বৃদ্ধ, যিনি সম্প্রতি লিভারের ক্যানসারে মরণাপন্ন। ডাক্তার বুড়ো কর্তার বাঁচার আশা ছেড়ে দেওয়ায় বাড়ির ছোটো বউয়ের বাবা একজন তান্ত্রিক এনেছেন, যিনি মন্ত্রের সাহায্যে বড়ো কর্তার প্রাণ ধরে রাখবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যজ্ঞ শেষ না হতেই বুড়ো কর্তা মারা যান।

এ বাড়ির কর্তার চার ছেলে এবং একজন অবিবাহিত বোন রয়েছে। এ বাড়ির লোকেরা বলেন, বড়ো পিসিমা নাকি শিব ঠাকুরকেই পতি হিসেবে মেনে নিয়েছেন, তাই আর কোনো মানুষের সঙ্গে বিয়ে করতে চাননি। কিন্তু অন্যরা জানে-সংসারের কাজকর্ম তদারকি করতে গিয়েই বড়ো পিসিমার বিয়ে করা হয়নি। এ বাড়ির চার ছেলের মধ্যে সেজোটি কেবল বিলেতে থাকে, অন্যরা তেমন কোনো কাজ করে না। এরা বেলা এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না, তাই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি। আসলে আঠারোটি দেবত্র বাড়ি থেকে ভাড়া বাবদ আয় আর বাদা অঞ্চলের অগাধ কৃষি জমি থেকে নানারকম চাল আমদানি হয় বলে সংসার চালানোর চিন্তা এদের কোনো কালেই আসেনি।

বাড়ির কাজকর্ম তিন বউ ও বেশ কয়েকজন কাজের লোক মিলে সামলায় কিন্তু সংসারের রাশ ধরে রেখেছেন বড়ো পিসিমা-“এ সংসারে সবকিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে।” বড়ো বউ বাড়ির বুড়ো কর্তার দেখাশোনা করে। মেজো বউ শাশুড়ির জন্য নানারকমের মাছ রান্না করছিল-যদি বুড়ো কর্তার মৃত্যুতে তিনি বিধবা হয়ে আর মাছ-মাংস খেতে না পারেন, এই কারণে। বাড়িতে রান্নার ঠাকুর রয়েছে, রয়েছে বাসিনী-যে রান্নাঘরের ফাইফরমাশ খাটে। বুড়ো কর্তার একজন খাস ঝি-ও রয়েছে।

এ বাড়িতে ধান-চালের প্রাচুর্য থাকলেও এরা চাকরবাকরের প্রতি সদয় নয়। উচ্ছবকে এ বাড়িতে রাখা হয়েছে যজ্ঞের কাঠ কাটার জন্য। সে যে অনেকদিন ধরে ভাত খায়নি তা জানতে পেরেও তাকে আগে দু-মুঠো খেতে দেয়নি এ বাড়ির লোকেরা।

আরও পড়ুন – কে বাঁচায়, কে বাঁচে গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো

Leave a Comment