এমস টেলিগ্রাম কি – আজকের পর্বে এমস টেলিগ্রাম কি তা আলোচনা করা হল।
এমস টেলিগ্রাম কি
এমস টেলিগ্রাম সম্বন্ধে লেখো। |
ভূমিকা
এমস নামক একটি জায়গা থেকে প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম তাঁর প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ককে একটি টেলিগ্রাম করেছিলেন। এটিই এমস টেলিগ্রাম নামে পরিচিত। এখনকার মতো ফোন বা ফ্যাক্সের সুবিধা তখন না থাকায় মোর্স ভাষায় টেলিগ্রাম ছিল যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম।
এমস টেলিগ্রাম
ঘটনাটির সূত্রপাত ঘটেছিল স্পেনের সিংহাসনের উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করে। স্পেনের সিংহাসন গ্রহণের জন্য হোহেনজোলার্ন বংশীয় প্রিন্স লিওপোল্ডকে অনুরোধ করা হয়। এই খবরে ফ্রান্স চিন্তিত হয়ে পড়ে। কারণ, ফ্রান্সের পূর্বদিকে জার্মানি ও পশ্চিম দিকে অবস্থিত স্পেনে একই বংশের সম্রাটরা আসীন হলে তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত কাউন্ট বেনিদিতি প্রাশিয়ার রাজার সঙ্গে দেখা করেন। উদ্দেশ্যে ছিল স্পেনের সিংহাসনে হোহেনজোলার্ন বংশীয় কেউ যাতে না বসে তার প্রতিশ্রুতি আদায় করা। প্রাশিয়ার রাজা তখন এমস নামক জায়গায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি ফ্রান্সের রাজাকে এ ব্যাপারে তাঁর অক্ষমতার কথা প্রকাশ করেন। এরপর সমস্ত ঘটনা তিনি প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ককে টেলিগ্রাম মারফত জানান। এটি ‘এমস টেলিগ্রাম’ নামে পরিচিত। বিসমার্ক টেলিগ্রামের কয়েকটি শব্দ বাদ দিয়ে পরদিন তা সংবাদপত্রে ছাপানোর ব্যবস্থা করেন। শব্দগুলি বাদ দেওয়ার ফলে মনে হয় যে প্রাশীয় রাজা ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে অপমান করছেন। এতে ফ্রান্স ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাশিয়া আক্রমণ করে। বিসমার্কের ইচ্ছাপূরণ হয়। বিসমার্ক বলেন যে, তিনি লাল কাপড় দেখিয়ে গল (ফ্রান্স) দেশের ষাঁড়কে খেপিয়ে দিয়েছেন।
তাৎপর্য
শুধু ইউরোপ নয়, গোটা পৃথিবীর ইতিহাসে ‘এমস টেলিগ্রাম’ নামক ঘটনাটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল। সাধারণ একটি ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে বিসমার্ক যেভাবে ফ্রান্সকে খেপিয়ে তুলেছিলেন, তা বোধহয় পররাষ্ট্র নীতির ইতিহাসে বিরল। এভাবে হিটলার জার্মানির ঐক্য আন্দোলন সম্পূর্ণ করেছিলেন।