আধুনিক জীববিদ্যার প্রয়োগ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও। |
(i) কৃষিকার্যে উন্নতি (Agricultural development): পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেশি পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিচ্ছে। তাই সংকরায়ণ পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে উচ্চফলনশীল বীজ তৈরি (যেমন- IR-8 ধান, সোনালিকা গম, জহর ভুট্টা প্রভৃতি) করা হচ্ছে। এর ফলে অল্প সময়ে অধিক ফলন হয়। এ ছাড়া, কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগে বীজহীন ফল উৎপাদন, বিভিন্ন আধুনিক পদ্ধতির সাহায্যে কীটপতঙ্গ দমন ও গুদামজাত ফসল সংরক্ষণ প্রভৃতি করা হচ্ছে, ফলে শস্যের অপচয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।
(ii) ওষুধ তৈরি (Preparation of Medicine): নানাপ্রকার অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ উৎপাদন, ভ্যাকসিন উৎপাদন, হরমোন সংশ্লেষ, বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে আধুনিক জীববিদ্যার ভূমিকা অসীম।
(iii) মহাকাশ গবেষণা (Space research): মহাকাশ গবেষণায় আধুনিক জীববিদ্যার প্রয়োগ প্রভূত সাফল্য এনে দিয়েছে। জীববিদ্যার জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মহাকাশ অভিযানে ক্লোরেল্লা (Chlorella) নামক শৈবাল ব্যবহার করা হয়। এই ক্লোরেল্লা একদিকে যেমন খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তেমনই এই ক্লোরেল্লা সালোকসংশ্লেষের জন্য মহাকাশচারীদের দ্বারা উৎপাদিত CO₂ গ্রহণ করে এবং O₂ বর্জন করে তাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের জোগান দেয়।
(iv) পরিবেশদূষণ রোধ (Prevention of pollution): আধুনিক জীববিদ্যার প্রয়োগ দ্বারা পরিবেশকে অনেকাংশে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিভিন্ন প্রকার শৈবাল, কচুরিপানা চাষের মাধ্যমে দূষিত জল থেকে ভারী ধাতু মুক্ত করা যায়। নানা প্রকার জৈব সার ব্যবহার করে মাটির দূষণ কমানো যায় এবং মাটির উর্বরতাও বৃদ্ধি করা যায়।
(v) জনবিস্ফোরণ রোধ (Prevention of overpopulation): আধুনিক জীববিদ্যার সাহায্যে জনবিস্ফোরণ রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া উন্নত জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দ্বারা দুর্বল ও অপুষ্ট শিশুর জন্ম রোধ করা সম্ভব হয়েছে।