অসুখী একজন কবিতার মর্মার্থ বিশ্লেষণ করে, কে কেন অসুখী বুঝিয়ে দাও

অসুখী একজন' কবিতার মর্মার্থ বিশ্লেষণ করে, কে কেন অসুখী বুঝিয়ে দাও
অসুখী একজন’ কবিতার মর্মার্থ বিশ্লেষণ করে, কে কেন অসুখী বুঝিয়ে দাও।

মমার্থ

পাবলো নেরুদা রচিত এবং নবারুণ ভট্টাচার্য অনূদিত ‘অসুখী একজন’ কবিতায় মানবতার জয়গান গাওয়া হয়েছে। চিলির গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে কবিতার কথক একদিন তার বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে যান বাধ্য হয়েই। তার ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে প্রিয় নারীটি। সে জানত না যে কথক আর কখনও ফিরবেন না। সময় অতিবাহিত হতে থাকে। বিচ্ছেদের বেদনা এবং অপেক্ষার দীর্ঘতা ভারাক্রান্ত করে মেয়েটির হৃদয়-

‘আর একটার পর একটা, পাথরের মতো 
পর পর পাথরের মতো, বছরগুলো 
নেমে এল তার মাথার ওপর।’

এরপর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেই যুদ্ধের আগুনে জনপদ ছারখার হয়ে যায়। শহর জুড়ে ছড়িয়ে থাকে ধ্বংস আর রক্তপাতের চিহ্ন। কিন্তু যুদ্ধের সর্বগ্রাসী আগুন ধ্বংস করতে পারে না অপেক্ষারত সেই মেয়েটিকে। বিপুল ধ্বংসের মধ্যে সে বেঁচে থাকে জীবনের প্রতীক হয়ে। আসলে মানবতার মৃত্যু নেই, মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা কখনো নিঃশেষ হয় না। সে যেন দিনবদলের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রেখে দিল।

অসুখী হওয়ার কারণ

‘অসুখী’ সেই মেয়েটি। মেয়েটি আসলে কথকের মাতৃভূমি, প্রেম ও মানবতার প্রতীক। প্রিয়জনের জন্য অন্তহীন প্রতীক্ষা, বিচ্ছেদবেদনা আর যুদ্ধের বীভৎসতার কারণে সে অসুখী। বিপরীত দিক থেকে বিচার করলে কবিতা-কথককেও অসুখী বলা যায়। তিনি প্রিয় নারী, বাসভূমি ছেড়ে চলে গেছেন দূরে। আর কোনোদিন ফিরতে পারেননি। বিরহবেদনা তাকে জর্জরিত করেছে। যুদ্ধের বীভৎসতায় ধ্বংস হয়ে গেছে তার ‘মিষ্টি বাড়ি,’ নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকার সেই বারান্দা। বিধ্বস্ত হয়ে গেছে তার স্মৃতির শহর তথা স্বদেশ। এরই সঙ্গে বিধ্বস্ত হয়েছে তার হৃদয়। তাই তিনি অসুখী।

Leave a Comment