“সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না।”-কোন্ মেয়েটির কথা বলা হয়েছে? মেয়েটি কোন্ অবস্থায় রয়ে গেল বর্ণনা দাও। |
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা ‘অসুখী একজন’ কবিতায় কবি পাবলো নেরুদা স্বজনের ফেরার অপেক্ষায় বসে থাকা বিপন্ন এক মেয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রশ্নোদৃত অংশে সেই মেয়েটির কথাই বলা হয়েছে। জনৈক এক বক্তার একক কথনের ভঙ্গিতে কবিতাটি উপস্থাপিত। উল্লিখিত মেয়েটি এই বক্তারই একান্ত প্রিয়জন।
আলোচ্যমান মেয়েটিকে বক্তা একলা ঘরে রেখে দূরদেশে যেতে বাধ্য হয়। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েটি তার প্রিয়জনের আগমন প্রত্যাশা করে, কিন্তু সময়ের স্রোতে সব কিছুই বয়ে যায়। দিন-সপ্তাহ-মাস-বছর পেরিয়ে গেলেও বক্তা ফিরে আসে না। তার যাত্রাপথ এবং চিরচেনা পথঘাট নতুন ঘাসে ভরে যায়। মেয়েটির জীবনে নামে আর-এক দুর্যোগ, ভয়ংকরতম যুদ্ধের ঘোর অমা। যুদ্ধের করালগ্রাসে শিশু-নারীসহ অগণিত মানুষ মারা যায়। বাড়িঘর, সমতল ভূমি, মন্দির-মসজিদ-গির্জা, সাজানো বাগান সমাজ-সভ্যতার যা কিছু মানুষ ও প্রকৃতির দান সবই ধ্বংস হয়ে যায়-
“যেখানে ছিল শহর
সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা
দোমড়ানো লোহা, মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস
মাথা”
এরূপ বিভীষিকাময় পরিবেশে প্রিয়জনের ঘরে ফেরার একরাশ আশা নিয়ে বেঁচে থাকল শুধু মেয়েটি। অনন্ত অপেক্ষার অমোঘ নিয়তি তাকে বাঁচিয়ে রাখল।