শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল -কার কথা বলা হয়েছে? সে ‘ক্রমশ আবছা হয়ে গেল’ কেন |
“শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।”-কার কথা বলা হয়েছে? সে ‘ক্রমশ আবছা হয়ে গেল’ কেন? |
উদ্দিষ্ট
উদ্ধৃতাংশে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ রচিত ‘ভারতবর্ষ‘ গল্পের নামগোত্রহীন থুথুড়ে ভিখিরি বুড়ির কথা বলা হয়েছে।
বুড়ির আবছা হয়ে যাওয়ার কারণ
গল্পের শেষ উদ্ধৃতিটি নিঃসন্দেহে ব্যঞ্জনাময়। রাঢ়বঙ্গের দুঃসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে এক থুথুড়ে বুড়িবাজার এলাকায় প্রবেশ করে। ফাঁপির প্রবল শীতে বৃষ্টির মধ্যে বট গাছের খোঁদলে সে রাত্রিযাপন করে। কয়েকদিনের দুর্যোগ থামার পর সকালে নিথর বুড়িকে দেখে লোকজন অনুমান করে সে মৃত। এই অনুমানের পটভূমিতেই লেখক ভারতের ধর্মীয় দ্বন্দ্বের বিষকে তুলে ধরেন। দ্বন্দু যখন চরমসীমায় পৌঁছেছে তখনই লেখক বুড়িকে পুনর্জাগরিতকরেন। দুই লড়াকু সম্প্রদায়ের মানুষদের কৌতূহলী জিজ্ঞাসাকে উপেক্ষা করেনির্ভীক পদক্ষেপে বুড়ি চলে যায়। বুড়ির এইসময়ের উত্তিও আচরণে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের অসারতার প্রতিতীব্র অবজ্ঞা প্রকাশ পায়। তাই বুড়ির ‘দূরের দিকে ক্রমশ আবছা’ হয়ে যাওয়া যেন ধর্মের অমানবিক দিকটিবেই উপেক্ষাকরে এবং ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়।