শিকার কবিতায় ভোরের পরিবেশ যেভাবে চিত্রিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। সেই পরিবেশ কোন্ ঘটনায় করুণ হয়ে উঠেছিল?

শিকার কবিতায় ভোরের পরিবেশ যেভাবে চিত্রিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। সেই পরিবেশ কোন্ ঘটনায় করুণ হয়ে উঠেছিল?

'শিকার' কবিতায় ভোরের পরিবেশ যেভাবে চিত্রিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। সেই পরিবেশ কোন্ ঘটনায় করুণ হয়ে উঠেছিল
‘শিকার’ কবিতায় ভোরের পরিবেশ যেভাবে চিত্রিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। সেই পরিবেশ কোন্ ঘটনায় করুণ হয়ে উঠেছিল?

ভোরের পরিবেশ

জীবনানন্দ দাশ রচিত ‘শিকার’ কবিতায় কবি ‘ভোর’ শব্দপ্রয়োগে দুটি ভিন্ন চিত্রকল্প নির্মাণ করেছেন। প্রথম পর্যায়ে ভোরের আলোয় সজীব, বন্যপ্রকৃতির সৌন্দর্য প্রকাশ করেছেন। ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল আকাশ, সবুজ পেয়ারা ও নোনার গাছ অন্ধকার ভেদ করে তার সমস্ত প্রাণের আশ্বাস নিয়ে বর্তমান। পাড়াগাঁর বাসরঘরের গোধূলিমদির মেয়েটির মতো মলিন একটি তারা আকাশে তখনও জেগে আছে। কবির কল্পনায় সেই রাতজাগা তারা হাজার বছর আগের কোনো মিশরীয় মানুষীর বুকের থেকে রাখা মুক্তার মতো। দেশজ মানুষ শীতের রাতে উন্নতার জন্য যে আগুন জ্বেলেছিল, শুকনো অশ্বত্থপাতার সেই আগুন ছিল গাঢ় লাল, কিন্তু সূর্যের আলোয় তার রং ম্লান হয়ে গেছে। সকালের আলোয় শিশিরের ছোঁয়ায় বন আর আকাশ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছে।

পরবর্তী পর্যায়ে, রাতের হিমশীতল অন্ধকার ভেদ করে ভোরের উজ্জ্বল রোদ ওঠে। সেই পরিবেশে একটি সুন্দর বাদামি হরিণ তার ক্লান্ত, অবসন্ন শরীরকে আবেশ দেওয়ার জন্য নদীর তীক্ষ্ণ ঢেউয়ে নামে।

করুণ পরিণতি

নদীর জলে ভাসমান হরিণকে লক্ষ করে সভ্য, নাগরিক মানুষ গুলি করে। ‘অদ্ভুত শব্দে’ পরবর্তী দৃশ্যপট করুণ হয়ে ওঠে। নদীর স্নিগ্ধ জল তখন ‘মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল’। যে সুন্দর বাদামি হরিণ ‘সাহসে সাধে সৌন্দর্যে হরিণীর পর হরিণীকে চমক লাগিয়ে দেবার জন্য’ সারারাত চিতাবাঘিনির হাত থেকে আত্মরক্ষা করেছিল; শিকারির হিংস্র বর্বরতায় সে মৃত্যুর আঁধারে হারিয়ে যায়।

Leave a Comment