শত দিবসের রাজত্ব বলতে কী বোঝো

শত দিবসের রাজত্ব বলতে কী বোঝো
শত দিবসের রাজত্ব বলতে কী বোঝো
এলবা দ্বীপের নির্বাসন থেকে ফিরে নেপোলিয়ন ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত প্রায় ১০০ দিন ফ্রান্সে রাজত্ব করেন। এই সময়কাল ফ্রান্সের ইতিহাসে ‘একশত দিবসের রাজত্ব’ নামে পরিচিত।

নেপোলিয়নের প্রত্যাবর্তনের কারণ

নেপোলিয়নকে এলবা দ্বীপে নির্বাসিত করা হলে ফ্রান্সে বুরবোঁ বংশের অষ্টাদশ লুই এর শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেপোলিয়ন ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের সুযোগ খুঁজছিলেন এবং এলবা থেকে ফ্রান্স ও ইউরোপের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলেন। মূলত দুটি কারণ তাঁকে ফ্রান্সে প্রত্যাবর্তনে উৎসাহিত করেছিল।

ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ অরাজক পরিস্থিতি

অষ্টাদশ লুই এর শাসনের প্রতি ফরাসিবাসীর অনীহা ও সন্দেহ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ।

মিত্রপক্ষের মধ্যে অনৈক্য

নেপোলিয়নের নির্বাসনের পর মিত্রশক্তিবর্গ ইউরোপের প্রাবিপ্লব পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ভিয়েনাতে এক সম্মেলনে মিলিত হন। পোল্যান্ড রাইনল্যান্ড, স্যাক্সনী ও ইতালিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে প্রবল মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এই অন্তর্দ্বন্দ্ব নেপোলিয়নকে উৎসাহিত করেছিল।

ফ্রান্সে প্রত্যাবর্তন ও শাসনভার গ্রহণ

ফ্রান্স ও ইউরোপের পরিস্থিতির সুযোগ বুঝে নেপোলিয়ন এলবা থেকে ১০৫০ জন সমেত সুকৌশলে প্যারিসে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ফরাসি সেনাবাহিনী ও জনগণের সমর্থনে আবার সিংহাসনে বসেন। অষ্টাদশ লুই পালিয়ে কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচান। এই সময় তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত ১০০দিন রাজত্ব করেছিলেন যা ‘একশত দিবসের রাজত্ব’ নামে পরিচিত।

মিত্রশক্তির প্রতিক্রিয়া

ফ্রান্সের নেপোলিয়নের প্রত্যাবর্তন ও শাসন প্রতিষ্ঠার ঘটনায় মিত্রশক্তিবর্গ হতচকিত হয়ে পড়ে এবং নেপোলিয়নকে আইন বর্হিভূত ও বিশ্বশান্তির অন্যতম শত্রু বলে ঘোষণা করে।
শেষপর্যন্ত ১৮জুন, ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ওয়াটার্লর যুদ্ধে নেপোলিয়নকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয়।

Leave a Comment