লিপজিগের যুদ্ধকে ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ’ বলা হয় কেন

লিপজিগের যুদ্ধকে 'জাতিসমূহের যুদ্ধ' বলা হয় কেন
লিপজিগের যুদ্ধকে ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ’ বলা হয় কেন

ভূমিকা

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের সামরিক জীবনে ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত, লাইপজিগের যুদ্ধ (১৮১৩ খ্রি.) ছিল এক দিকচিহ্ন। কারণ এই যুদ্ধে তাঁর পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে ফরাসি সাম্রাজ্যের অবক্ষয় শুরু হয়।

লিপজিগের যুদ্ধ-এর যুদ্ধের কারণ

জাতিসমূহের যুদ্ধের কারণ বা প্রেক্ষাপট ছিল–

চতুর্থ রাষ্ট্রজোট গঠন

নেপোলিয়নের মস্কো অভিযানের ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে ইংল্যান্ড, রাশিয়া, প্রাশিয়া, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশের নেতৃত্বে নেপোলিয়ন বিরোধী চতুর্থ রাষ্ট্রজোট গড়ে ওঠে।

জার্মানির জাগরণ

মস্কো অভিযানের ব্যর্থতা প্রাশিয়ায় নেপোলিয়ন বিরোধী জাতীয় অভ্যুত্থানের সূচনা করেছিল। ফরাসি কর্তৃত্ব থেকে জার্মানভাষী জনগণকে মুক্ত করার আন্দোলনে প্রাশিয়া নেতৃত্ব দান করে ও ফ্রান্স-প্রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হয় (১৮১৩ খ্রি.)।

যুদ্ধের সূচনা

ফ্রান্স-প্রাশিয়া যুদ্ধে নেপোলিয়ন জয়লাভ করেন এবং একটি চুক্তি দ্বারা সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘটে। ইতিমধ্যে অস্ট্রিয়ার মেটারনি ‘প্রাগের প্রস্তাব’ প্রেরণ করে নেপোলিয়নকে জার্মানি ত্যাগের অনুরোধ করলে নেপোলিয়ন তা অস্বীকার করায় আবার যুদ্ধ শুরু হয়। নেপোলিয়ন ড্রেসডেনের যুদ্ধে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করলেও লাইপজিগের যুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে পরাজিত হন (১৮১৩ খ্রি.)।

গুরুত্ব

লাইপজিগের যুদ্ধে প্রাশিয়া, ইংল্যান্ড, রাশিয়া-সহ প্রায় তেরোটি দেশ নেপোলিয়নের বিরোধিতা করেছিল, তাই তা জাতিসমূহের যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম, কারণ ১ এই যুদ্ধে নেপোলিয়নের পরাজয়ের ফলে বহির্দেশে তাঁর সাম্রাজ্যের ভাঙনের সূচনা হয়; ২ রাইন রাষ্ট্রসংঘ ভেঙে পড়ে, ৩ জার্মানি নেপোলিয়নের শাসনমুক্ত হয়। এইভাবে নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যের বাঁধন ছিন্ন হল।

Leave a Comment