রক্তের একটা কালো দাগ।/আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়-কোথায় রক্তের দাগ দেখা যায়? কার অপেক্ষায় মেয়েটি কেন দাঁড়িয়ে থাকে

“রক্তের একটা কালো দাগ।/আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।"-কোথায় রক্তের দাগ দেখা যায়? কার অপেক্ষায় মেয়েটি কেন দাঁড়িয়ে থাকে?“রক্তের একটা কালো দাগ।/আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।"-কোথায় রক্তের দাগ দেখা যায়? কার অপেক্ষায় মেয়েটি কেন দাঁড়িয়ে থাকে
“রক্তের একটা কালো দাগ।/আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।”-কোথায় রক্তের দাগ দেখা যায়? কার অপেক্ষায় মেয়েটি কেন দাঁড়িয়ে থাকে?
মানবতাবাদী কবি পাবলো নেরুদার ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি হতে পারে কবির নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার সারস্বত প্রকাশ কিংবা কবির জানা সত্য ঘটনার এক মরমিয়া উপলব্ধি। কবিতার বক্তা তার নিজের এক আত্মীয়াকে গ্রামের বাড়িতে একলা রেখে দূরদেশে চলে যেতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে তার সেই চিরচেনা পথমাঝে তার পদচিহ্ন ধীরে ধীরে মুছে যেতে শুরু করে বৃষ্টির জলে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে সেখানে ঘাস জন্মায়। সেই অবসরে আবার যুদ্ধ এসেছে আপন ধ্বংসাত্মক রূপে। ঘরবাড়ি, সম্পত্তি সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। (মানবসমাজের বুকের ওপর বয়ে গেছে রক্তের বন্যা-কবি রক্তের দাগ বলতে এই দাগের কথাই বুঝিয়েছেন।

কবিতায় উদ্দিষ্ট বক্তার জন্য সীমাহীন অপেক্ষা নিয়ে বসে থাকে মেয়েটি। বক্তার দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে সময়ের গুরুভার পাথরের মতো চেপে বসে মেয়েটির জীবনে। এরপর যুদ্ধের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি-জনজীবন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। যুদ্ধের করাল গ্রাসে শেষ হয়ে যায় মানুষ, মানুষের বেঁচে থাকার আশ্রয়। কিন্তু সেই ধ্বংসপুরীর মধ্যেও আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে অপেক্ষায় থাকে মেয়েটি। আসলে যুদ্ধ-হিংসা-ক্রোধ-লালসা মানবসমাজকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেলেও মানুষের চিরন্তন আশা প্রাণের পিদিম জ্বালিয়ে রাখে। যুদ্ধে সব হারানো নিঃস্ব মানুষের প্রতিভূ হিসেবে যেমন একলা মেয়েটি দাঁড়িয়ে থাকে, তেমনি মানুষের একান্ত কামনা-আশাভরসার প্রতিমূর্তি হিসেবেও তাকেই দেখা যায়। সর্বোপরি, পাবলো নেরুদা একজন মানবতাবাদী কবি তাই ধ্বংসের তাণ্ডবের মাঝেও মানুষের মনে ভালোবাসার আশ্বাস জাগিয়ে তুলতে ভোলেননি। আর এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেছে একাকী অপেক্ষমান মেয়েটি।

Leave a Comment