যে-কোনো তিনটি অচিরাচরিত শক্তির উৎসগুলি লেখো। তাদের গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

যে-কোনো তিনটি অচিরাচরিত শক্তির উৎসগুলি লেখো। তাদের গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো
যে-কোনো তিনটি অচিরাচরিত শক্তির উৎসগুলি লেখো। তাদের গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
যে-সমস্ত শক্তি সম্পদ বর্তমানে তেমন প্রচলিত না হলেও ভবিষ্যতে একসময় বহুল প্রচলিত হবে, তাদের অচিরাচরিত শক্তি সম্পদ বলে। এর উৎসগুলি হল–

সৌরশক্তি

সূর্য হল অফুরন্ত শক্তির উৎস। সমগ্র পৃথিবীত প্রতি ঘণ্টায় যে পরিমাণ সৌরশক্তি আসে তা প্রায় 21,000 কোটি টন কয়লার তাপশক্তির সমান। মূলত এই সৌরশক্তিকে সৌর প্যানেল ও সিলিকন সেলের ব্যাটারির মাধ্যমে সংঘবদ্ধ করা হয়। সৌরকুকার, সোলার ড্রায়ার, সৌর জলাশয় প্রভৃতি হল সৌরশক্তি সংঘবদ্ধ করার কয়েকটি বিশেষ পদ্ধতি।

ব্যবহার / গুরুত্ব: সৌরশক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তাকে কাজে লাগিয়ে বৈদ্যুতিক আলো প্রজ্বলন, টিভি, পাখা, রেফ্রিজারেটার, পাম্প চালানো সোলার ড্রায়ার ব্যবহৃত হয়; সৌরকুকার ব্যবহার করা হয়; হয়; ফসলের আর্দ্রতা দূরীকরণে বিভিন্ন স্থানে রান্নার কাজে শীতপ্রধান দেশে ঘর গরম রাখা, জল পরিস্তুত করা, যানবাহনের সিগনাল নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থায় সৌরশক্তির ব্যবহার দেখা যায়।

উদাহরণ: অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থানে সৌরশক্তির ব্যবহার দেখা যায়।

বায়ুশক্তি

উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রবল বায়ুপ্রবাহে 30 – 4 মিটার উঁচু স্তম্ভযুক্ত পাখায় ডায়ানামো ঘুরিয়ে মোটরের মাধ্যমে বায়ুশক্তি উৎপাদন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে ভারতে প্রায় 3000 -এরও বেশি বায়ুচালিত পাম্প রয়েছে। প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর মুপান্দালে ভারত তথা এশিয়ার বৃহত্তম বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র অবস্থিত।

ব্যবহার / গুরুত্ব: বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে গ্রাম, শহর ও শিল্পাঞ্চলে বৈদ্যুতিক বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চালানো হয়; কৃষিক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ জল আহরণে পাম্প চালানো হয়; ধান ও গম ভাঙানো, খড়কাটা, আখ-মাড়াই প্রভৃতি কাজ বায়ুচালিত যন্ত্রের মাধ্যমে করা হয়; বায়ুশক্তি উৎপাদনের যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি বিদেশে বিক্রি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।

উদাহরণ: ভারতে গুজরাট, তামিলনাড়ু, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি রাজ্যে বায়ুকল রয়েছে।

ভূতাপ শক্তি

ভূ-অভ্যন্তরও হল অফুরন্ত তাপশক্তির এ উৎস। ভূগর্ভস্থ তাপের উৎসগুলি হল অগ্ন্যুৎপাত, উম্ন প্রস্রবণ প্রভৃতি। মূলত ভূগর্ভের উয় স্থানগুলিতে পাইপের মাধ্যমে ঠান্ডা জল পাঠিয়ে বাষ্প সৃষ্টি করে তার সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। প্রসঙ্গত, 10 কিমি গভীরতায় এই ভূতাপ শক্তির বাৎসরিক প্রাপ্তি প্রায় 12,000 কিলোওয়াট প্রতি ঘণ্টা।

ব্যবহার / গুরুত্ব: ভূতাপ শক্তির দ্বারা ঘর, গৃহস্থালিতে আলো জ্বালানো হয়; কলকারখানায় ছোটো ছোটো যন্ত্রপাতি চালানো হয়; শীতপ্রধান দেশে ঘর গরম রাখা হয়; উন্নত দেশে কৃষিক্ষেত্রে পাম্প চালাতে ভূতাপ শক্তি ব্যবহৃত হয়।

Leave a Comment