মেঘ-মদির মহুয়ার দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আড়ালে কবি শ্রমজীবী মানুষের যে বাস্তব চিত্রাঙ্কন করেছেন, তা আলোচনা করো। |
মহুয়ার দেশের বর্ণনা
সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি মহুয়ার দেশের শান্ত সবুজ সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন। মহুয়ার দেশের পথের দু-ধারে দেবদারু বনের দীর্ঘ ছায়া পড়ে আর দূরে সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ “রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে”। এই মহুয়ার দেশ মেঘ-মদির। কবির কল্পনার এই স্থানটি গড়ে উঠেছে নাগরিক জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত বৃত্তে। কবি এখানে এসে প্রকৃতির স্পর্শে নিজের সব ক্লান্তি দূর করতে চান। গায়ে মেখে নিতে চান মহুয়া ফুলের সুগন্ধ।
মহুয়ার দেশের প্রভাব
নগরজীবনের দীর্ঘ ক্লান্তি কবিকে আচ্ছন্ন করে। তাই অবসাদগ্রস্ত কবি নগরজীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে মহুয়ার দেশের প্রকৃতিলগ্ন জীবনে পালিয়ে যেতে চান। কিন্তু মহুয়ার দেশে গিয়ে কবি পুঁজিবাদের আগ্রাসন দেখতে পান। কবির কল্পনার সেই চিরশান্তির দেশে কয়লাখনির ‘গভীর, বিশাল শব্দ’ মুহূর্তের স্তব্ধতাকে নষ্ট করে দেয়। কবি উপলব্ধি করেন সেই শিল্পকারখানার গ্লানি যেন ধুলোর কলঙ্কের মতো রাতজাগা মানুষের দেহ- মনে ছায়া ফ্যালে। তাই কবিমন আবার বিষণ্ণতায় ভরে যায়।