মহুয়ার দেশ কবিতায় কীভাবে নাগরিক সভ্যতা বা পুঁজিবাদী শিল্প সভ্যতার থাবা গ্রাম্য জীবনকে গ্রাস করেছে তা বর্ণনা করো

'মহুয়ার দেশ' কবিতায় কীভাবে নাগরিক সভ্যতা বা পুঁজিবাদী শিল্প সভ্যতার থাবা গ্রাম্য জীবনকে গ্রাস করেছে তা বর্ণনা করো
‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কীভাবে নাগরিক সভ্যতা বা পুঁজিবাদী শিল্প সভ্যতার থাবা গ্রাম্য জীবনকে গ্রাস করেছে তা বর্ণনা করো।

গ্রামজীবনের স্বরূপ

কবি সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবির দুটি সম্পূর্ণ আলাদা মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। এই কবিতার প্রথম অংশে আছে নাগরিক জীবনে ক্লান্ত কবির নাগরিক জীবন থেকে অনেক অনেক দূরে প্রকৃতির কোলে মহুয়ার দেশে পালিয়ে যাওয়ার আর্তি। তাই কবি তাঁর প্রতিদিনের চেনা নগরজীবনের ধোঁয়া-দূষণের অত্যাচার থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় স্বপ্ন দেখেছেন প্রকৃতির স্নিগ্ধতার। স্বপ্ন দেখেছেন, মহুয়ার দেশের দেবদারু বনের শীতল ছায়ায় আশ্রয় নেওয়ার। মেঘ-মদির মহুয়ার দেশের নিঃশব্দ পরিবেশে সমুদ্রের গর্জন শুনতে চেয়েছেন, গায়ে মহুয়া ফুলের সুগন্ধ মেখে নিয়ে দেহ-মনের ক্লান্তি দূর করতে চেয়েছেন তিনি। এভাবেই কবিতার প্রথম অংশে নাগরিক জীবনের বিপরীতে গ্রামজীবনকে উপস্থিত করেছেন কবি।

গ্রামজীবনের ধ্বংসসাধন

যখন কবি মহুয়ার দেশে পৌঁছোলেন তখন দেখলেন তাঁর কল্পিত মহুয়ার দেশের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। আসলে মহুয়ার দেশের মতো প্রকৃতিলালিত গ্রামগুলিতেও এখন নাগরিক জীবনের ছোঁয়া লেগেছে। পুঁজিবাদী শিল্পসভ্যতা কেড়ে নিয়েছে সেখানকার মানুষের জীবনের সহজ সারল্য। তারা এখন কয়লাখনির শ্রমিকে পরিণত হয়েছে। তাইতো কবি তাদের চোখে প্রাণস্পন্দনের বদলে দেখেছেন ক্লান্তি, অবসন্নতা। সমুদ্রের কল্লোল শোনার বদলে শুনতে পেয়েছেন কয়লাখনির যন্ত্রের গভীর বিশাল শব্দ। এভাবেই কবিতার দ্বিতীয় অংশে কবি নাগরিক সভ্যতার আঘাতে গ্রামজীবনের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার চিত্র এঁকেছেন।

Leave a Comment