“ভাতে হাত ঢুকিয়ে দিতে সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে।”-কার, কোন্ অনুভূতি প্রসঙ্গে উক্তিটি করা হয়েছে? ভাতের সংস্পর্শে সে যে স্বর্গসুখ পায়, তার বিবরণ দাও। |
যার, যা অনুভূতি
মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পে বর্ণিত ক্ষুধার্ত উৎসব অন্নসংস্থানের আশায় কলকাতার বড়ো বাড়িতে কাজ করতে যায়। সেখানে প্রতিদিন পাঁচরকম চালে রান্না হয়, যা বাদা থেকে আসে। সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা অনাহারী উৎসব বড়ো বাড়ির এই বিপুল বৈভবের আড়ম্বরেও বিনা পরিশ্রমে ভাত পায় না। ‘ভাতের হুতাশে’ আড়াই মন কাঠ কেটে ফেললে উৎসব দ্যাখে বাড়ির কর্তা মারা যাওয়ায় বাসিনী সব ভাত অশৌচের সংস্কারবশত ফেলে দিতে যাচ্ছে। উৎসব সেই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেয় কোনোভাবেই সেই ভাত সে ফেলে দিতে দেবে না। তাই বাসিনীর থেকে মোটা চালের ভাতের ভারী ডেকচি নিয়ে দূরে ফেলে আসবে বলে প্রথমে হনহনিয়ে হাঁটে তারপর ডেকচি নিয়ে দৌড়োতে থাকে। অমঙ্গলের আশঙ্কায় বাসিনী তাকে বাধা দিতে এলে ক্ষুধার্ত উৎসবের ভিতরের প্রেতপুরুষটা বেরিয়ে আসে। দাঁত বের করে কামটের মতো হিংস্র ভঙ্গি করে সে এক নিশ্বাসে ছুটে স্টেশনে চলে যায়।
স্বর্গসুখের বিবরণ
অনাহারী উৎসব ভাতের ডেকচির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে পরম শান্তি পায়। দীর্ঘদিনের অভুক্ত উৎসব তার ক্ষুধানিবৃত্তির জন্য ভাত খেতে খেতে যেন শ্রেষ্ঠ জাগতিক সুখ পায়। চল্গুনীর মা-ও তাকে কখনও সেই সুখ দিতে পারেনি। তাই সেই আশ্লেষে উৎসব ভাবতে থাকে তার সঙ্গে তার অভুক্ত পরিবারও সেই ভাত খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্ত করে। সুখের আবেশেই উৎসব কখন যেন ঘুমিয়ে পড়ে। তাই আসল বাদাটা তার আর খোঁজা হয় না। লোকজন তাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়।