বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদ সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো। |
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের প্রধান বক্তা হলেন কার্ল মার্কস এবং ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস। আদি সমাজতন্ত্রবাদীরা সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সঠিক পথ দেখাতে ব্যর্থ হলে মার্কস এবং এঙ্গেলসের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদ ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের মূল বক্তব্য
কতকগুলি নির্দিষ্ট মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের মূল বক্তব্যগুলি হল-
সর্বহারার একনায়কত্ব
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সকলপ্রকার শ্রেণিহীন ও শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। তাঁদের বিশ্বাস এরূপ সমাজের নেতৃত্ব দেবে শ্রমিকশ্রেণি। এর ফলে রাষ্ট্রে ‘সর্বহারার একনায়কত্ব’ প্রতিষ্ঠা হবে।
প্রাকৃতিক সম্পদে সকলের সমান অধিকার
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের মতে সমাজের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি, যেমন- জমি, জল, জঙ্গল প্রভৃতি কোনো ব্যক্তির দ্বারা সৃষ্ট নয়। ফলে এগুলির উপর কোনো ব্যক্তিগত মালিকানা থাকা উচিত নয়। বরং এই সম্পদের উপর সকলের সমান অধিকার থাকা উচিত।
উৎপাদন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীদের লক্ষ্য ছিল উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যক্তিমালিকানার অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা, যাতে সমাজে পুঁজিবাদীদের প্রভাব হ্রাস করা যায়।
সম্পদ বণ্টনে সাম্য প্রতিষ্ঠা
পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় স্বল্পসংখ্যক পুঁজিপতিদের হাতে বিপুল সম্পদ জমা হলেও শ্রমিকরা থাকে নিঃস্ব ও রিক্ত। সমাজে সম্পদ বণ্টনে অসাম্যের কারণে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা চিন্তিত ছিলেন। সম্পদ বণ্টনে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজে মালিক ও শ্রমিকশ্রেণির মধ্যেকার বৈষম্য দূর হবে বলে তারা মনে করতেন।
সর্বোপরি, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীগণ প্রত্যেকের কাজের অধিকার দাবি করেন। তাঁরা মনে করতেন, বেকারদের কাজের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।