‘বিস্ফোরণ, কলম বিস্ফোরণ।’ -কোন রচনায়, কে এই মন্তব্য করেছেন? যে কলম সম্পর্কে এই মন্তব্য করা হয়েছে, তার কীরকম বিস্ফোরণ ঘটেছিল তা লেখো। |
‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ এরকম মন্তব্য করেছেন।
লেখক শ্রীপান্থ যখন ছোটো ছিলেন, তখন থেকেই কলমের নানান বিবর্তন দেখে এসেছেন। জেনেছিলেন আগের কলমগুলোর বিবর্তনের কথাও। যেমন-বাঁশের কলম বা কঞ্চির কলম বহু আগে থেকেই ছিল। ছিল পালকের কলম ‘কুইল’ও। সেই কুইল ভারতবর্ষে ব্যবহার করতেন উইলিয়াম জোন্স এবং কেরি সাহেবের মতো আর অনেকেই। ফাউন্টেন পেন লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান আবিষ্কার করার পর পূর্বের সেই পালকের কলম, বাঁশ-কঞ্চির কলম উধাও হয়ে যায়। চারিদিকে তখন ফাউন্টেন পেনের রমরমা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু সে পেনের রমরমাও শেষ হয়ে যায় সস্তার ডটপেন এসে পড়াতে। সেই ডটপেনই ঘটিয়ে দেয় কলম বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণের প্রভাব পড়ে সর্বত্রই-
কলমের সর্বজনীনতা
আগেকার দিনে কলম সবার কাছে পাওয়া যেত না বলে এবং ফাউন্টেন পেন যেমন-পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান প্রভৃতির দাম বেশি ছিল বলে সেসব সর্বভোগ্য ছিল না। কিন্তু সস্তার কলম এসে পড়ায় সেই সম্ভার পেন সর্বজনীন ও সর্বভোগ্য হয়ে ওঠে। কলমের আগের ঐতিহ্য এবং মর্যাদাই হারিয়ে যায়।
সস্তার কলমের বহু ব্যবহার
সস্তার কলম এসে পড়ায় সে কলম স্থান পেয়েছে নানান জায়গায়। ফেরিওয়ালার হাতে তো বটেই, কখনও কানে, কখনও কাঁধের ছোট্ট পকেটে, কখনও পায়ের মোজায়, কখনও বা চুলেও তার অবস্থান লক্ষ করা যায়। তাকে দেখা যায় সকলের পকেটেও।
-এভাবেই সস্তার কলম ডটপেন একেবারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিয়েছে। পিছনে হটিয়ে দিয়েছে কলমের আগের ঐতিহ্য এবং মর্যাদাকে।