বাস্তিল দুর্গের পতন টীকা লেখো |
ফরাসি বিপ্লবের গতিপথে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের প্রতীক বাস্তিল দুর্গের পতন (১৪ জুলাই, ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দ) ছিল একটি দিচিহ্ন, যা একই সঙ্গে ফরাসি বিপ্লবকে রক্ষা করেছিল ও জনগণের বিপ্লবের সূচনা করেছিল।
পতনের কারণ
বাস্তিল দুর্গের পতনের কারণগুলি ছিল :
খাদ্যাভাব: ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাস থেকে ফ্রান্সে খাদ্যাভাব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্ব ও সরকারের বৈষম্যমূলক কর নীতি জনগণের মনকে ক্রুদ্ধ করে তুলেছিল।
ষোড়শ লুইয়ের পদক্ষেপ : ফরাসি রাজা ষোড়শ লুই কর্তৃক জনপ্রিয় মন্ত্রী নেকারকে পদচ্যুত করে দেশত্যাগের নির্দেশ (১১ জুলাই, ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দ) এবং প্যারিস ও ভার্সাই-এ সৈন্য মোতায়েন করার ঘটনা জনগণের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করেছিল।
বাস্তিল দুর্গের পতন
উপরোক্ত পরিস্থিতিতে ১৪ জুলাই প্রায় সাত-আট হাজার জনতার একটি দল বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে (অবশ্য ঐতিহাসিক আলফ্রেড কোব্যান-এর মতে, এই সংখ্যা ছিল ৮০০)। যা হোক বাস্তিল আক্রমণকারী জনতা বাস্তিল দুর্গ ধ্বংস করে বন্দিদের মুক্ত করে দেয় ও দুর্গের অস্ত্রশস্ত্রসহ অন্যান্য জিনিস লুঠ করে।
পতনের গুরুত্ব
বাস্তিল দুর্গের পতনের উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব ছিল : স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের প্রতীক বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ ও তার পতন ছিল রাজশক্তির বিরুদ্ধে সফল প্রতিবাদ। ঐতিহাসিক গুডউইনের মতে বাস্তিলের পতনের মতো আর কোনো বিপ্লবের ঘটনার এতটা সুদূরপ্রসারী গুরুত্ব ছিল না। ফরাসিরা এই দিনটিকেই স্বাধীনতা দিবস রূপে পালন করে। (১) বাস্তিলের পতন স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের পতন সূচনা করে। (২) ফ্রান্স তথা ইউরোপের মুক্তিপিপাসু মানুষের কাছে মুক্তির অনুপ্রেরণা নিয়ে আসে। (৩) গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক উন্মাদনার সৃষ্টি হয়। (৪) অভিজাত শ্রেণি দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।