বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কাকে বলে । ভারতের কয়েকটি প্রধান প্রধান নদী উপত্যকা পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও

বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কাকে বলে । ভারতের কয়েকটি প্রধান প্রধান নদী উপত্যকা পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও

বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কাকে বলে? ভারতের কয়েকটি প্রধান প্রধান নদী উপত্যকা পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
বহুমুখী নদী পরিকল্পনা কাকে বলে? ভারতের কয়েকটি প্রধান প্রধান নদী উপত্যকা পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

সংজ্ঞা

নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে জনহিতকর একাধিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, তাকে বহুমুখী নদী পরিকল্পনা বলে। যেমন- মহানদী উপত্যকা পরিকল্পনা।

ভারতের কয়েকটি প্রধান নদী উপত্যকা পরিকল্পনা

দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা

নদীর নাম: দামোদর।

উপকৃত রাজ্য: পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড।

উদ্দেশ্য: দামোদর উপত্যকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা, তাপ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা, ব্যারেজ নির্মাণ করা প্রভৃতি।

ফলাফল: ‘বাংলার দুঃখ’ নামে পরিচিত দামোদর নদে বহুমুখী নদী পরিকল্পনার সাহায্যে বন্যাকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে, সেচের উন্নতি হয়েছে, বিদ্যুতের চাহিদা মিটেছে, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। তিলাইয়া, মাইথন, কোনার বাঁধ নির্মিত হয়েছে। এটি আমেরিকার টেনেসি ভ্যালি অথরিটির অনুকরণে নির্মিত হয়েছে।

ভাকরা-নাঙ্গাল উপত্যকা পরিকল্পনা

নদীর নাম: শতদ্রু নদী।

উপকৃত রাজ্য: পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ ও রাজস্থানের মিলিত প্রয়াসে নির্মিত।

বৈশিষ্ট্য: (ⅰ) ভারতের বৃহত্তম ভাক্রা বাঁধটি 518 মিটার লম্বা, 226 মিটার উঁচু ও 305 মিটার চওড়া, এর পিছন দিকে প্রায় 165 বর্গকিমি ক্ষেত্রমানের একটি বিশাল জলাশয় গোবিন্দ সাগর নির্মাণ করা হয়েছে। (ii) নাঙ্গাল বাঁধের দৈর্ঘ্য 314 মিটার ও প্রস্থ 112 মিটার।

উদ্দেশ্য: জলসেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা।

ফলাফল: (i) কৃষিকাজের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। (ii) চারটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে রাজ্যের গ্রাম ও শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।

মহানদী উপত্যকা পরিকল্পনা

নদীর নাম: মহানদী।

উপকৃত রাজ্য: ওড়িশা।

বৈশিষ্ট্য: ভারতের দীর্ঘতম (প্রায় 26 কিমি) বাঁধ। এর নাম হিরাকুঁদ বাঁধ।

উদ্দেশ্য: জলসেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন।

ফলাফল: 2.86 লক্ষ হেক্টর কৃষিজমিতে জলসেচ করা সম্ভব হয়েছে।

কংসাবতী প্রকল্প

নদীর নাম: কংসাবতী ও তার উপনদী কুমারী।

উপকৃত অঞ্চল : বাঁকুড়া (পশ্চিমবঙ্গ) জেলার অম্বিকানগর ও মুকুটমণিপুর।

উদ্দেশ্য: জলসেচ করা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা।

ফলাফল : ও লক্ষ 68 হাজার হেক্টর জমি জলসেচের আওতায় আনা হয়েছে।

ময়ূরাক্ষী পরিকল্পনা

নদীর নাম : ময়ূরাক্ষী নদী।

উপকৃত রাজ্য : ঝাড়খণ্ড।

বৈশিষ্ট্য: কানাডা সরকারের সহযোগিতায় বিহারের ম্যাসাঞ্জোরে ময়ূরাক্ষী নদীতে কানাডা বাঁধ ও পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সিউড়ির নিকট তিলপাড়া বাঁধ নির্মিত হয়েছে।

ফলাফল: 2 লক্ষ 51 হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে জলসেচ করা সম্ভব হয়েছে।

এ ছাড়া অন্যান্য পরিকল্পনাগুলি হল- তিস্তা প্রকল্প – জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প (পশ্চিমবঙ্গ), কোশী পরিকল্পনা (বিহার), গণ্ডক পরিকল্পনা (বিহার), ও বিপাশা পরিকল্পনা (পাঞ্জাব, হরিয়ানা), চম্বল পরিকল্পনা (মধ্যপ্রদেশ), রিহান্দ পরিকল্পনা (উত্তরপ্রদেশ) ফারাকা পরিকল্পনা (পশ্চিমবঙ্গ), তুন্সভদ্রা পরিকল্পনা (অস্ত্রপ্রদেশ, কর্ণটিক), নাগার্জুন সাগর পরিকল্পনা (অস্ত্রপ্রদেশ), কয়না প্রকল্প (কর্ণটিক), এ তান্তী পরিকল্পনা (গুজরাট), রামপদসাগর পরিকল্পনা (অস্ত্রপ্রদেশ), গোমতী পরিকল্পনা (ত্রিপুরা), উমিয়াম পরিকল্পনা (মেঘালয়), তেহরী পরিকল্পনা (উত্তরাখণ্ড) প্রভৃতি।

আরও পড়ুন – নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা

Leave a Comment