ফ্রান্সকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’ বলা হয় কেন
ফ্রান্সকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’ (Museum of Economic Errors) বলা হয় কেন? |
ফ্রান্সের আর্থিক অবস্থা ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। ফ্রান্সের রাজস্বব্যবস্থা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তা ছাড়া সরকারের অমিতব্যয়িতা, বিলাসিতা, ব্যয়সংকোচে অনিচ্ছা, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ফ্রান্সের পরিস্থিতিকে ভয়ংকর করে তুলেছিল। এইসব কারণে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ (Adam Smith) তৎকালীন ফ্রান্সকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’ (Museum of Economic Errors) বলেছেন।
ত্রুটিপূর্ণ করব্যবস্থা
ফ্রান্সে কর আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো ন্যায়সংগত নীতি ছিল না। অভিজাত ও যাজকরা ছিলেন ফ্রান্সের বেশিরভাগ জমির মালিক। অথচ তারা কর দিতেন সরকারের আয়ের মাত্র ৪%। আর মোট রাজস্বের ৯৬% দিতে হত দরিদ্র কৃষকদের।
সরকারের বেহিসাবি অর্থব্যয়
ফ্রান্সের রাজাদের বেহিসাবি অর্থব্যয়ের ফলে ফ্রান্সের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল।
যুদ্ধনীতির অযৌক্তিকতা
চতুর্দশ লুই ও পঞ্চদশ লুইয়ের আমলে বিভিন্ন যুদ্ধে যোগদানের ফলে ফ্রান্সের প্রচুর অর্থব্যয় হয়েছিল, যা ফরাসি অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেয়।
রাজকোশে সংকট
উপরোক্ত কারণে বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সের রাজকোশে সংকট দেখা যায়। ষোড়শ লুইয়ের সময়ে তুর্গো, নেকার প্রমুখ অর্থমন্ত্রী অভিজাতদের বিরোধিতায় আর্থিক সমস্যা সমাধানের কাজটি সঠিকভাবে করতে না পারায় রাজকোশ প্রায় শূন্য হয়ে পড়ে।
অর্থনৈতিক সংকট
জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদির ফলে প্রাক্-বিপ্লব পর্বে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে শস্যহানি ঘটলে এই সংকট আরও প্রবল হয়।
ফ্রান্সের এই অর্থনৈতিক বিপর্যয় কালক্রমে ফরাসি বিপ্লব সংগঠনে ইন্ধন জুগিয়েছিল।
আরও পড়ুন – 1943 খ্রিস্টাব্দে বাংলায় দুর্ভিক্ষের কারণ গুলি কী ছিল