ফরাসি বিপ্লবে তথা জনচেতনায় গুজবের প্রভাব আলোচনা করো

ফরাসি বিপ্লবে তথা জনচেতনায় গুজবের প্রভাব আলোচনা করো
ফরাসি বিপ্লবে তথা জনচেতনায় গুজবের প্রভাব আলোচনা করো।

যে-কোনো আন্দোলন, বিপ্লব বা বিদ্রোহের মতো ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালেও অদ্ভুত ও অবাস্তব সব অভিযোগের ভিত্তিতে সাধারণ মানুষ যাজক, অভিজাত, রাজা, রানি প্রমুখের বিরুদ্ধে গুজব রটিয়ে জনচেতনা বৃদ্ধি করেছিল তথা নানাভাবে বিপ্লবকে প্রভাবিত করেছিল।

প্রথমত,
১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন গুজব রটে যে, রাজা ষোড়শ লুই তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছেন। এরপরেই তৃতীয় শ্রেণির প্রতিনিধিরা স্টেটস্ জেনারেলের সভাকক্ষ বন্ধ দেখে গুজবটি সত্য বলে ভাবেন এবং টেনিস কোর্টের শপথের মাধ্যমে বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেন। 

দ্বিতীয়ত, আবার বাস্তিল দুর্গ আক্রমণকালে গুজব ছড়ায় যে, অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই কামানের মুখ জনতার দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে জনমানসে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

তৃতীয়ত, জর্জ লেফেভর (Lefebre)-এর বিবরণ থেকে জানা যায় যে, বাস্তিল দুর্গের পতনের পর কৃষকরা চার্চ ও সামন্তপ্রভুদের দেয় করগুলি বন্ধ করে দিলে কৃষকসমাজে গুজব ছড়ায় যে, ভূস্বামীরা গুন্ডাদের দিয়ে তাদের উপর আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে- এর ফলে বিক্ষুব্ধ. কৃষকরা আরও হিংস্র হয়ে উঠলে শেষ পর্যন্ত সংবিধান সভা সামন্ততান্ত্রিক আধিপত্যের অবসান ঘটায়। ভাজাভাজিম করী করিয়

সর্বোপরি, কোবান (Cobban)-এর বিবরণ থেকে জানা যায়, সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড (১৭৯২ খ্রি.-র ২-৬ সেপ্টেম্বর) ঘটার আগে গুজব রটে যে বিদেশি সেনাদল প্যারিসের মাত্র ২০০ মাইল দূরে রয়েছে। তারা প্যারিসে এসে বন্দি অভিজাতদের মুক্ত করবে এবং বিপ্লবীদের উপর আঘাত হানবে- অতএব এই আতঙ্কের ফলই হল সেপ্টেম্বরের হত্যাকাণ্ড।

এইভাবে ফরাসি বিপ্লবের বিভিন্ন পর্যায়ে নানান ‘গুজব’ বিপ্লবকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছিল।

Leave a Comment