প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ যেভাবে কলমের বিবর্তনের কথা তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, তা উল্লেখ করো

প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ যেভাবে কলমের বিবর্তনের কথা তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, তা উল্লেখ করো
প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ যেভাবে কলমের বিবর্তনের কথা তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, তা উল্লেখ করো।
লেখক শ্রীপান্থ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে নিজের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে কলমের আদি অবস্থা থেকে বর্তমান রূপ প্রাপ্তির কথা প্রকাশ করেছেন। লেখক যখন ছেলেবেলায় গ্রামের স্কুলে পড়তেন তখন কলম তৈরি হত বাঁশের কঞ্চি কেটে ছুঁচোলো করে। পাখির পালক, নলখাগড়া থেকেও কলম তৈরি হত। এই কলমের কালি তৈরি হত ঘরোয়া পদ্ধতিতে। পরবর্তীকালে কালির বড়ি পাওয়া যেত এবং শেষ পর্যন্ত বোতলবন্দি রাসায়নিক কালিও ক্রমশ সহজলভ্য হয়ে ওঠে।

প্রাচীন সুমেরিয়ান কিংবা ফিনিসিয়ান সভ্যতায় নলখাগড়া ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে বা হাড়কে কলম হিসেবে ব্যবহার করে লেখা হত। রোমে ব্রোঞ্জের শলাকা বা স্টাইলাসকে কলম হিসেবে ব্যবহার করা হত।

ক্রমে পালকের কলমের পরিবর্তে নিব পেন তৈরি হয়, যা পালকের কলমের মতো দোয়াতে ডুবিয়ে লেখা হত। তবে তা সহজে ভোঁতা হত না। আমেরিকান ব্যবসায়ী ওয়াটারম্যান তৈরি করেন ফাউন্টেন পেন এবং পরবর্তী কালে ওই ধারণার একটু রদবদল ঘটিয়ে তৈরি হয় বল পেন বা ডট পেন। সহজলভ্য সস্তা বল পেন বর্তমানে বাজার ছেয়ে গেছে, ফলে তা এখন শিক্ষিত অল্পশিক্ষিত ও বিভিন্ন পেশার মানুষের হাতেই কুক্ষীগত হয়েছে।

বর্তমানে কম্পিউটারের সহজ সুন্দর ব্যবহার ধীরে ধীরে মানুষকে কলমবিমুখ করে তুলছে। এখন অফিস আদালতে কিংবা সাহিত্যিকরা কলমের বদলে কম্পিউটারে লেখালেখিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই লেখক লেখালেখির অফিসে কাজ করলেও সেখানে কারওর কাছে কলম খোঁজ করে পান না। কলমের পরিপূরক কম্পিউটারের দাপটে কলমের স্থান ইতিহাসে ক্রমশই পাকা হচ্ছে।

Leave a Comment