পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির ফলাফল উল্লেখ করো
|
পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলাফলসমূহ
যে গতির দ্বারা সূর্যকে সামনে রেখে পৃথিবী তার মেরুদণ্ডের ওপর অনবরত ঘুরতে ঘুরতে নির্দিষ্ট কক্ষপথে, পশ্চিম থেকে পূর্বে (ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে) 365 দিনে 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা প্রায় 365 দিন 6 ঘণ্টায় সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে, সেই গতিকেই পরিক্রমণ বা বার্ষিক গতি বলে।
ঋতুপরিবর্তন
সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বছরের বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়। পৃথিবীর মেরুরেখা কক্ষতলের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে থাকার ফলে এবং পৃথিবী গোলাকার হওয়ায় ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র সূর্যরশ্মি একই কোণে পড়ে না। সূর্যরশ্মি কোথাও লম্বভাবে, কোথাও তির্যকভাবে পড়ার ফলে বিভিন্ন স্থানে তাপের তারতম্য হয়। এইভাবে উন্নতার হ্রাসবৃদ্ধি অনুযায়ী বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা স্থানে নানা ঋতু বিরাজ করে।
দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি
সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় পৃথিবীর মেরুরেখা তার কক্ষতলের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে অবস্থান করে। এর ফলে, সূর্য কখনও উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তিরেখার ওপর, আবার কখনও দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তিরেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। সেইজন্য উত্তর গোলার্ধে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বছরের বিভিন্ন সময়ে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে। দেখা গেছে-[i] 21 জুন উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড়ো এবং রাত্রি সবচেয়ে ছোটো হয়, [ii] 21 মার্চ ও 23 সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য সমান হয়, তাই এই দুই দিনকে ‘বিষুব’ বলে। [iii] 22 ডিসেম্বর দক্ষিণ গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ও রাত্রি ছোটো, অন্যদিকে উত্তর গোলার্ধে এর ঠিক বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হয়।
বর্ষ ও অধিবর্ষ
সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর একবার ঘুরে আসতে সময়
লাগে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড। একে বছর বা বর্ষ বলা হয়। আবার 4 বছর অন্তর । দিন বাড়িয়ে বছরকে অধিবর্ষ হিসেবে ধরা হয়।
পৃথিবীর তাপমণ্ডলের সৃষ্টি
বছরের বিভিন্ন সময় সূর্যের আলো বিভিন্ন কোণে পতিত হয়। এর ওপর নির্ভর করে পৃথিবীকে তিনটি তাপমণ্ডলে, যথা-উন্নমণ্ডল, নাতিশীতোয় মণ্ডল ও হিমমণ্ডলে ভাগ করা হয়েছে।