নারীস্বাধীনতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো |
বিহু: হ্যাঁ, বল।
ঋতু: প্রতিদিন খবরে প্রকাশিত নারীনির্যাতনের ঘটনা যে বেড়েই চলেছে সেটা কি তুই খেয়াল করেছিস?
বিহু: হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস। রোজই কোনো না কোনো বধূনির্যাতন, নারীর যৌন নির্যাতন, কন্যাভ্রূণ হত্যা ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে খবর চোখে পড়ে।
ঋতু: তা ছাড়াও আমাদের সমাজে নারীদের নীরব থাকার কারণে বহু খবর প্রকাশিত হয় না।
বিহু: সে তো রামায়ণ কিংবা মহাভারতে সীতা বা দ্রৌপদীকে মনে করলেই বোঝা যায়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর অবস্থান কোথায়।
ঋতু: আবার, ভেবে দেখ, যদি বৈদিক সভ্যতার কথা ভাবি, তাহলে দেখব মাতৃতান্ত্রিক সমাজের চিত্র।
বিহু: তাহলে এই অবস্থার পরিবর্তনটা হল কীভাবে?
ঋতু: সে তো নিশ্চয়ই একটা দীর্ঘ ইতিহাস। তবে এর মূলে ছিল প্রধানত নারীর অজ্ঞতা, চেতনার পশ্চাৎপদতা।
বিহু: এটা ঠিকই যে নারীদের সঠিকভাবে শিক্ষাদান করে চেতনার উন্মীলন ঘটানোর সময় এসে গিয়েছে।
ঋতু: হ্যাঁ, তবেই প্রকৃতপক্ষে নারীস্বাধীনতা সম্ভব হবে।
বিহু: নারীস্বাধীনতার প্রধান বিষয়ই হল নারীর চিন্তার স্বাধীনতা, চলনের স্বাধীনতা।
ঋতু: যদি সত্যই নারী স্বাধীনতা সম্ভব হয়, তবে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে নারী তার সম্মান ও শ্রদ্ধা পাবে।
বিহু: এরসঙ্গে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে, যদি প্রশাসন ও আইন ব্যবস্থার সংস্কার ঘটে তবে নারী স্বাধীনতার পথ কিছুটা সহজ হবে।
ঋতু: কিন্তু সমস্ত দায় কেবলমাত্র আইন বা প্রশাসনের উপর বর্তায় না। নারীর নিজের চিন্তার মুক্তি ও প্রসারতা প্রয়োজন।
বিহু: হ্যাঁ, যদি নারী তার সংস্কারের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারে, যদি পুরুষতান্ত্রিক চোখরাঙানির বাইরে নিজেকে এনে দাঁড় করাতে পারে তবেই এই পথ চলা সফল হবে।
ঋতু: দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তনেই একদিন নারী স্বাধীনতার স্বপ্ন সার্থক হবে এই আশা করা যায়।