দোয়াত ও কালির হারিয়ে যাওয়ার যে ইতিহাস শ্রীপান্থ তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে তুলে ধরেছেন, সে ইতিহাসের বর্ণনা দাও। |
‘কালির হারিয়ে যাওয়া’
লেখক শ্রীপান্থরা ছেলেবেলায় থাকতেন গ্রামে। তখন থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত তিনি দেখে এসেছেন কালি ও দোয়াতের বিবর্তন। সেই সময়ে গ্রাম অঞ্চলে, এমনকি অন্য জায়গাতেও কালি নিজেদেরই তৈরি করে নিতে হত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। সেক্ষেত্রে-
ভুষোকালি
কাঠের উনুনে রান্না করা কড়াইয়ের তলার কালি ঘষে তুলে সেই কালির গুঁড়ো জলে গুলে নানান পদ্ধতিতে কালি তৈরি করা হত।
দেশি কালি
তরল কালি তখন কিনতেও পাওয়া যেত। ‘কাজল কালি’, ‘সুলেখা কালি’ সেই তরল কালির মধ্যে অন্যতম ছিল। এছাড়াও কালি ট্যাবলেট পাওয়া যেত। তার রং ছিল দুরকম-লাল ও নীল।
বিদেশি কালি
শ্রীপান্থদের সময়ে বিদেশি কালিও পাওয়া যেত। তবে তা ছিল মূলত ফাউন্টেন পেনের জন্যে।
-বর্তমানে ডটপেন এসে পড়ায় কলমের জন্যে আলাদা করে কালি তৈরি বা কেনার প্রয়োজন পড়ে না।
দোয়াতের হারিয়ে যাওয়া
অন্যদিকে প্রথম দিকের দোয়াত হত মাটির। সেই মাটির দোয়াতের পাশাপাশি ছিল কাচের, কাট-গ্লাসের, পোর্সেলিনের, শ্বেতপাথরের, জেডের, পিতলের, ব্রোঞ্জের, ভেড়ার শিংয়ের, এমনকি সোনার দোয়াতও দেখা যেত। সেসব দোয়াতের কোনো কোনোটিতে সাহিত্য এবং ইতিহাসের নানান চরিত্র যুক্ত করা হত।-আজকের দিনে তরল। কালির ব্যবহার ও ফাউন্টেন, কুইল ইত্যাদি কলমের ব্যবহার না থাকায় দোয়াতের ব্যবহারও উঠে গিয়েছে। সরস্বতী পুজোর সময়ই শুধু দোয়াতের ব্যবহার এখন দেখা যায়। সেক্ষেত্রে দেবীর কাছে দোয়াতে দুধ ভরে খাগের কলম বা কঞ্চির কলম রাখা হয় তাতে। কিছু অফিসে যে দোয়াত রাখা হয়, তাও শুধুই লোক দেখানো।