দৈব রাজতন্ত্র বলতে কী বোঝায়

দৈব রাজতন্ত্র বলতে কী বোঝায়
দৈব রাজতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?

দৈব রাজতন্ত্র

যে রাজতন্ত্রে রাজারা নিজেদের ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলে মনে করতেন, ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতায় বিশ্বাস করতেন এবং নিজেরা ইচ্ছানুসারে সীমাহীন স্বৈরতন্ত্রের মাধ্যমে দেশশাসন করতেন, তাকে ‘দৈব রাজতন্ত্র’ বলা হয়।

ফরাসি রাজন্ত্র

ফ্রান্সের বুরবোঁ রাজতন্ত্রকে দৈব রাজতন্ত্র বলা যায়। কারণ-

রাজারা ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতায় বিশ্বাসী:
ফ্রান্সের রাজারা ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতায় বিশ্বাস করতেন। ফরাসি প্রশাসনে জনগণের মতামতের কোনো মূল্য ছিল না। রাজা তাঁর কাজের জন্য কারোর কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য ছিলেন না।

স্বৈরাচারী শাসন: ফ্রান্সের রাজারা নিজ ইচ্ছানুসারে স্বৈরাচারের মাধ্যমে দেশশাসন করতেন। তাঁরা ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ শাসক, আইনপ্রণেতা ও বিচারক। রাজাদের ইচ্ছাই ছিল আইন।

• সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী সম্রাট চতুর্দশ লুই (Louis XIV) বলেছিলেন, ‘আমিই রাষ্ট্র’ (I am the State)।

• দাম্ভিক সম্রাট ষোড়শ লুই (Louis XVI) বলতেন, ‘আমি যা ইচ্ছা করি তাই আইন’ (It is legal because I wish it) |

বিরুদ্ধ মত

ফরাসি সম্রাট দৈবক্ষমতা দাবি করলেও বাস্তবে তাঁর ক্ষমতা ছিল সীমিত। কারণ রাজকীয় ক্ষমতার উপর ফ্রান্সের ১৩টি প্রাদেশিক সভা বা পার্লামেন্টের সীমাহীন প্রভাব ছিল। রাজা কোনো আদেশ জারি করলে সেই আদেশকে প্রাদেশিক সভার অনুমোদন পেতে হত। অনুমোদন না পেলে তা প্রদেশে কার্যকর হত না।

প্রাদেশিক সভার সদস্য যাজক ও অভিজাতরা বিরোধিতা করলে রাজা কিছু করতে পারতেন না। সে ক্ষেত্রে রাজকীয় আইনও কার্যকর করা যেত না। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ডেভিড থমসন (David Thomson) বলেছেন যে, ‘ফরাসি রাজতন্ত্র ছিল আসলে সামন্ত রাজতন্ত্র’ (The French monarchy was a feudal monarchy) |

Leave a Comment