“দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতোই হিংস্র ভঙ্গি করে।”-কে, কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল? তার এরূপ আচরণের কারণ কী? |
যে, যার প্রতি
মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পে ক্ষুধার্ত উৎসব নাইয়া তার গ্রাম সম্পর্কিত বোন এবং বড়ো বাড়ির পরিচারিকা বাসিনীর প্রতি উদ্ধৃত আচরণটি করেছিল।
উচ্ছবের আচরণ
দীর্ঘদিন অভুক্ত, সর্বহারা উচ্ছব খাবারের আশায় বড়ো বাড়িতে কাজ করতে আসে। কাঠ কাটলে ভাত খেতে পাবে এই আশায় অভুক্ত, দুর্বল শরীরে সে আড়াই মন কাঠ কেটে ফ্যালে। কিন্তু, বাড়ির বুড়ো কর্তা মারা গেলে বড়ো পিসিমার নির্দেশে বাসিনী রান্না করা ভাত অশৌচের অজুহাতে উৎসবকে খেতে না দিয়ে পথে ফেলতে গেলে উচ্ছব মোটা চালের ডেকচি নিয়ে পালাতে শুরু করে। বাসিনী তাকে বাধা দিলে সে উদ্ধৃত আচরণটি করে।
কারণ
সুন্দরবনের বাদার বাসিন্দা উচ্ছবের মনিব সতীশবাবুর জমির ধান মড়কে নষ্ট হয়ে গেলে উচ্ছব অভুক্ত থাকে। এরপর মাতলা নদীর বন্যায় পরিবারকে হারানোর যন্ত্রণায় উচ্ছব ক্ষুধার তাড়না উপলব্ধি করতে পারেনি। পরে হুঁশ ফিরলে উচ্ছব বড়ো বাড়িতে ভাতের আশায় কাজ করতে আসে। কিন্তু সেখানেও সে সহজে ভাত পায় না। তাই বাসিনী ভাত ফেলতে এলে সে তার থেকে ভাতের পাত্র নিয়ে পালাতে থাকে। উচ্ছবের মঙ্গলচিন্তায় বাসিনী তাকে বাধা দিতে গেলে উৎসবের হিংস্র ক্ষুধার্ত সত্তা জেগে ওঠে। ক্ষুধার পাশবিক যন্ত্রণায় সে এরূপ আচরণ করে।