ত্রিশক্তি মৈত্রী (Triple Alliance) ও ত্রিশক্তি আঁতাত (Triple Entente) |
ঊনবিংশ শতকের শেষ ও বিংশ শতকের শুরুতে ইউরোপীয় রাজনীতিতে তীব্র ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দেয়। সমগ্র ইউরোপ এর ফলে দুটি পরস্পর বিবদমান সশস্ত্র শিবিরে ভাগ হয়ে যায়- ① ত্রিশক্তি মৈত্রী (Triple Alliance) এবং ② ত্রিশক্তি আঁতাত (Triple Entente) |
ত্রিশক্তি মৈত্রী
১৮৭১ খ্রিস্টাব্দের পর বিসমার্কের প্রধান লক্ষ্য ছিল ইউরোপের শক্তিসাম্য বজায় রাখা এবং ফ্রান্সকে দুর্বল করে রাখা। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে তিন সম্রাটের সংঘ বা ড্রেইকাইজারবুন্ড স্থাপন করেন। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ফলে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে বিসমার্ক গোপনে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে দ্বিশক্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। পরে ফ্রান্স ও ইটালির দ্বন্দ্বের সুযোগে তিনি ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে ইটালিকেও চুক্তিতে যুক্ত করেন। ফলে দ্বিশক্তি চুক্তি ত্রিশক্তি মৈত্রীতে পরিণত হয়।
এইভাবে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি, অস্ট্রিয়া এবং ইটালির মধ্যে ত্রিশক্তি মৈত্রী গড়ে ওঠে।
ত্রিশক্তি আঁতাত
ত্রিশক্তি মৈত্রী গড়ে ওঠার ২৫ বছর পর ত্রিশক্তি আঁতাত গড়ে ওঠে। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে জার্মানবিরোধী শক্তিজোট আত্মপ্রকাশ করতে থাকে। রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্কের অবনতি হয় এবং রুশ-ফরাসি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটাই ছিল ত্রিশক্তি মৈত্রীর বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা প্রথম ইউরোপীয় শক্তিজোট। এই পরিস্থিতিতে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে এবং ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এইভাবে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে ত্রিশক্তি আঁতাত গড়ে ওঠে।