“তিনিই ধন্য!”— তিনি কে? লেখিকা তাঁকে কেন ধন্যবাদ জানিয়েছেন

“তিনিই ধন্য!”— তিনি কে? লেখিকা তাঁকে কেন ধন্যবাদ জানিয়েছেন
“তিনিই ধন্য!”— তিনি কে? লেখিকা তাঁকে কেন ধন্যবাদ জানিয়েছেন?

আলোচ্য অংশটি বেগম রোকেয়া রচিত ‘হিমালয় দর্শন’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ‘তিনি’ বলতে লেখিকা জগৎস্রষ্টা, মহান শিল্পী, জাগতিক সকল সৌন্দর্যের সৃষ্টিকর্তা পরমেশ্বরকে বুঝিয়েছেন।

হিমালয় পার্বত্যপ্রদেশের সৌন্দর্য প্রত্যক্ষ করে লেখিকার উক্ত সৌন্দর্যের সৃষ্টিকর্তা তথা মহাশিল্পীর অনুপম শিল্পনৈপুণ্যের কথা বারবার মুগ্ধতার সঙ্গে স্মরণ করেছেন।
জাগতিক সকল সৌন্দর্যের স্রষ্টা ঈশ্বর। হিমালয়ের প্রতিটি অংশের সৌন্দর্যে জগৎপিতারই পরম স্পর্শ রয়েছে। পর্বতের প্রতিটি শৃঙ্গ, ঝরনার কল্লোলগীতি— এ তো বিশ্বস্রষ্টার অনন্ত সৃষ্টি ক্ষমতার অপরিমেয় মহিমা, যা দর্শন করে মানুষ মুগ্ধ হয়, পরিতৃপ্তি লাভ করে।
লেখিকা অধ্যাত্মবাদী। তাই বারবার ঈশ্বরের অপার লীলা তথা করুণার কথা ধ্বনিত হয়েছে তাঁর কণ্ঠে। তিনি মনে করেন ঈশ্বর করুণা করে এমন সৌন্দর্যদর্শনের সুযোগ করে দিয়েছেন তাঁকে, না-হলে তাঁর ক্ষমতা কোথায় সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিসুধারস পানের। তবে তাঁর আক্ষেপ ঈশ্বর কেন মাত্র দুটি চক্ষু দিয়েছেন। কারণ এতে তাঁর দর্শন-পিপাসা তো মেটেনি!
হিমালয়ের স্বর্গীয় সৌন্দর্য দর্শনে অভিভূত লেখিকার অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদিত হয়েছে পরমপিতার উদ্দেশে। তাই তিনি বলেন— “আমাদের এমন সুন্দর চক্ষু, কর্ণ, মন লইয়া যদি আমরা স্রষ্টার গুণকীর্তন না করি, তবে কি কৃতঘ্নতা হয় না?” তাই মহাশিল্পী তথা ঈশ্বরের সৃষ্টিসৌন্দর্যে গভীরভাবে আপ্লুত লেখিকা মনেপ্রাণে উপলব্ধি করেছেন “ঈশ্বরই প্রশংসার যোগ্য।”—এই কারণেই লেখিকা তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Comment