টীকা লেখো বাস্তিল দুর্গের পতন (Fall of Bastide)

টীকা লেখো: বাস্তিল দুর্গের পতন
টীকা লেখো: বাস্তিল দুর্গের পতন

বাস্তিল দুর্গ ছিল ফরাসি রাজতন্ত্রের অত্যাচারের অন্যতম কেন্দ্র। এই দুর্গে রাজতন্ত্রের বিরোধী ব্যক্তিদের বন্দি করে রাখা হত ও অত্যাচার করা হত। তাই জনগণের কাছে বাস্তিল দুর্গ ছিল ফরাসি রাজতন্ত্রের অত্যাচারের প্রতীক। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের বিদ্রোহী জনগণ বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে ধ্বংস করেছিল।

বাস্তিল দুর্গের পতনের কারণ

খাদ্যদ্রব্যের মূল্য হ্রাস ও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য প্যারিস নগর কর্তৃপক্ষ তাদের উপর আক্রমণ চালায়। সেইসঙ্গে সম্রাট ষোড়শ লুই-এর জনপ্রিয় অর্থমন্ত্রী নেকার (Necker)-কে পদচ্যুত করার সংবাদে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ বাধে । উন্মত্ত জনতা অধিক আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের জন্য ‘স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের প্রতীক’ বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে।

বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ ও ধবংস

প্যারিস শহরের উত্তেজিত জনতা ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ দখল করে ধ্বংস করে দেয়। সমস্ত বন্দিরাও মুক্তি পায়।

বাস্তিল দুর্গের পতনের ফলাফল

বাস্তিল দুর্গের পতনের ফলে-

  • রাজা ষোড়শ লুই-এর স্বৈরশাসনের অবসান হয়।
  • রাজা জাতীয় পরিষদকে স্বীকৃতি দেন এবং এই সময় থেকে রাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতা আইনসভার হাতে চলে যায়।
  • ফ্রান্সের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সূচনা হয় এবং অভিজাততন্ত্রের পতন আসন্ন হয়ে ওঠে। প্রায় ২০ হাজার অভিজাত দেশত্যাগী হয়।
  • বাস্তিলের পতন কৃষক বিদ্রোহে ইন্ধন জোগায়, সামন্ততন্ত্রের পতনের পথ প্রস্তুত এবং পৌরবিপ্লবেরও সূচনা করে। ঐতিহাসিক গুডউইন (Goodwin) বলেন- “বাস্তিলের পতনের মতো বিপ্লবের আর কোনো ঘটনার এত বহুমুখী ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল ছিল না।”

Leave a Comment