টিলসিটের সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) টীকা লেখ

টিলসিটের সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) টীকা লেখ
টিলসিটের সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) টীকা লেখ
১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রিডল্যান্ডের যুদ্ধে নেপোলিয়নের কাছে পরাজিত হয়ে রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার টিলসিটের সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।

টিলসিটের সন্ধির শর্ত

(ক) নেপোলিয়ন ইউরোপে যে সকল রাজনৈতিক সংগঠন স্থাপন করেন, রাশিয়ার জার তা মেনে নেন, (খ) পরাজিত শক্তির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় নীতির স্বীকৃতি দেন, (গ) ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে আত্মরক্ষামূলক মিত্রতা স্থাপিত হয়, (ঘ) রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের দ্বন্দ্বে নেপোলিয়ন জারের পক্ষ নিতে রাজি হন। সুইডেনের প্রতি জারের আগ্রাসন নীতিকে নেপোলিয়ন সমর্থন জানান, (ঙ) ইংল্যান্ডের সঙ্গে ফ্রান্সের দ্বন্দ্বে জার মধ্যস্থতায় রাজি হন, (চ) ইংল্যান্ড এই মধ্যস্থতার শর্ত অগ্রাহ্য করলে ইংল্যান্ডকে শাস্তি দিতে রুশ বন্দরগুলিতে ব্রিটিশ বাণিজ্য রদ করতে জার অস্বীকার করেন।

টিলসিটের সন্ধির গুরুত্ব

(ক) টিলসিটের সন্ধির ফলে ফ্রান্স বিরোধী তৃতীয় শক্তিজোট ভেঙে যায়, (খ) নেপোলিয়ন রাশিয়াকে নিরপেক্ষ রাখতে সক্ষম হয়, (গ) পূর্ব সীমান্তে নেপোলিয়নের আর কোনো ভয় রইল না, তিনি সমস্ত শক্তি পশ্চিমপ্রান্তে নিয়োগ করতে পেরেছিলেন, (ঘ) নেপোলিয়নের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। গৌরব সর্বোচ্চ

টিলসিটের সন্ধির দ্বারা নেপোলিয়নের শিখরে পৌঁছায়। ইতালি, জার্মানি ও মধ্য ইউরোপ নেপোলিয়নের পদানত হয়। এই সন্ধির ফলে নেপোলিয়নের আত্মপ্রত্যয় বৃদ্ধি পায় এবং ফলস্বরূপ পেনিনসুলার ও রুশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। পরিণামে তাঁর পতন ঘটে। তাই রাইকার যথার্থই বলেছেন, ‘টিলসিটের সন্ধি, একদিক থেকে নেপোলিয়নের সৌভাগ্যের অবসান সূচনা করে’ (Tilsit was in a sense, the turning point of his fortunes)।

Leave a Comment