জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের তপন চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন একটি অল্প বয়সি ছেলে। সদ্য বিবাহিত ছোটোমাসির থেকে সে প্রায় আট বছরের ছোটো। বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য তপন আর পাঁচটা ছেলের থেকে একটু আলাদা-

সাহিত্যপ্রীতি

তপন ছেলেবেলা থেকে অনেক গল্প
শুনেছে, আর এখন গাদা গাদা গল্প পড়ে। অর্থাৎ, বরাবরই তার সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে।

শিশুসুলভ কল্পনা

লেখকরা অসাধারণ মানুষ-এরকম
ধারণা ছিল তপনের। কিন্তু ছোটো মেসোমশাই আর পাঁচ জনের মতো স্নান, খাওয়াদাওয়া করেন, ঘুমোন, খবরের কাগজ পড়ে তর্ক করেন, এমনকি সিনেমাও দেখেন-এসব দেখে তপনের মনে সন্দেহ দূর হয় এবং সে বুঝতে পারে যে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।

আত্মবিশ্বাসী

গল্প পড়া ও শোনার প্রতি তপনের আগ্রহ ছিল, লেখক মেসোমশাইকে দেখে তার নিজের লেখার ক্ষমতা সম্পর্কে বিশ্বাস জন্মায়-“লেখক হতে বাধা কী?” প্রথম লেখা গল্পটি দেখে ছোটো মেসোমশাই প্রশংসা করে সেটি ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তপন আরও উৎসাহিত হয়ে একের পর এক গল্প লেখার নেশায় মেতে ওঠে।

অভিমানী

ছোটোমাসির সঙ্গে তপনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক তাই সে তার প্রথম লেখা গল্প তাকেই দেখায়। কিন্তু গল্পটি ছোটোমাসি “কোনোখান থেকে টুকলিফাই করিসনি তো?” বললে তপন অভিমানী হয়ে পড়ে।

বাস্তববোধ

‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের লেখা গল্প দেখে পরিবারের সবাই প্রশংসা করে। কিন্তু মেসোমশাই কারেকশানের কথা বললে তপনের কৃতিত্ব ছোটো হয়ে যায়, বরং মেসোমশাইয়ের বদান্যতার কথাই বারবার উঠে আসে। নিজের গল্প নিজে পড়তে গিয়ে তপন লক্ষ করে যে গল্পের প্রায় প্রতিটি লাইনই মেসোমশাইয়ের তৈরি করা। বাড়ির অন্যরা বিষয়টি বুঝতে না পারলেও তপন নিজের লেখার পরিবর্তিত রূপটি বুঝতে পারে। এরপর সে প্রতিজ্ঞা করে নিজের লেখা অন্য কারওর মাধ্যমে আর ছাপতে দেবে না, তাতে “ছাপা হয় হোক, না হয় না হোক।”

Leave a Comment