জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অবলম্বনে তপনের মেসোমশাই-এর চরিত্র আলোচনা করো। |
অপ্রিয় সত্যভাষণে অনভ্যস্ত
তপনের সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসি তপনের লেখা একটি গল্প লেখক মেসোর কাছে নিয়ে গেলে পেশায় প্রফেসার ছোটোমেসো সেই গল্প পড়ে প্রশংসা করে জানান, সামান্য ‘কারেকশান’ করে দিলে গল্পটি ছাপানো যায়। নতুন মেসোর এই আচরণে স্পষ্ট হয় যে, শ্বশুরবাড়িতে নতুন জামাই হিসেবে এসে তিনি তপনকে অপ্রিয় সত্য বলে অখুশি করতে চাননি। বরং প্রশংসার মাধ্যমে তিনি সকলের মন জিতে নিতে চেয়েছেন।
সংবেদনশীল ব্যক্তিত্বের আত্মপ্রকাশ
সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীর অনুরোধে নতুন মেসো প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি তপনের লেখা গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। এই ঘটনায় প্রমাণিত হয় নিজের স্ত্রীর মর্যাদার দিকে যেমন তার সতর্ক দৃষ্টি আছে, তেমনি তপনের প্রতি মমতায় নতুন মেসোর এক সংবেদনশীল ব্যক্তিত্বের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
প্রতিশ্রুতিবান অথচ অহংকারী
শুধু প্রতিশ্রুতি প্রদান নয়, লেখক মেসো তপনের লেখা গল্পটির কোন্টি বিশেষ সদর্থক দিক, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন শ্বশুরবাড়িতে। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চান ছেলেমানুষ তপনের কাঁচা লেখাতেও বিষয়বস্তুগত জোর আছে। অথচ ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘প্রথম দিন’ নামে মুদ্রিত গল্পটি তপনের লেখা নয়, ‘কারেকশান’-এর নামে সেটা তার লেখক মেসো নিজস্ব দক্ষতায় নতুন করে লিখে দিয়েছেন। তপনের নতুন মেসোর এই আচরণ প্রমাণ করে তিনি একজন প্রতিশ্রুতিরক্ষাকারী ব্যক্তিত্ব হলেও লেখক পরিচয়ের অহংবোধে তিনি তপনের আবেগকে ছুঁতে পারেন না।