জল সংরক্ষণের যে-কোনো দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
জল সংরক্ষণের যে-কোনো দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। |
জলকে সাশ্রয়ের সঙ্গে ব্যবহার করলে জল সংরক্ষণ করা যায়। জল সংরক্ষণের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি হল – বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ করা, ডিস্টিলেশন বা রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতিতে লবণমুক্তকরণ, জলবিভাজিকার স্থানান্তরণ করা, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে রাখা, জলের নতুন উৎসের সন্ধান করা প্রভৃতি।
দুটি পদ্ধতির বিবরণ-
দুটি পদ্ধতির বিবরণ-
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ
বর্ষাকালে বর্ষার জলকে দুভাবে কাজে লাগানো যায়- (ⅰ) ঢালু ছাদের জলকে সংরক্ষণ করে এবং (ii) সমতল ছাদের জলকে সংরক্ষণ করে। ছাদের জল মাটিতে পড়ে যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে ছাদের জলকে পাইপের সাহায্যে বাড়ির বাইরে নির্মিত জলাধার বা ভূ গর্ভস্থ জলাধারে সঞ্চয় করা যেতে পারে, যা বাগানে জল দিতে, স্নান করতে, গাড়ি ধুতে বা জামাকাপড় ধুতে সাহায্য করে। বৃষ্টির জল ভৌমজলস্তরকে পরিপূর্ণ করে বলে ভূগর্ভস্থ জলাধারগুলির মেঝে কংক্রিটের না করাই ভালো।
উদাহরণ- গুজরাট, রাজস্থানে এই উপায়ে বৃষ্টির জলকে সংরক্ষণ করা হয়।
গুরুত্ব – (ⅰ) শুষ্ক অঞ্চলগুলি উপকৃত হয়। (ii) ভৌমজলের সঞ্চয় হয় ও ভূগর্ভস্থ জলের ওপর নির্ভরশীলতা কমে। (iii) আর্সেনিক দূষণের মাত্রা কমে।
জলবিভাজিকা উন্নয়ন
নদীর ধারণ অববাহিকার সামগ্রিক ও বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনার মাধ্যমে ওই নদী অববাহিকা ও তার উচ্চভূমি অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র, পরিবেশ, জলের প্রবাহ ও জলসম্পদের স্থায়ী উন্নয়ন করার ব্যবস্থাই হল জলবিভাজিকা উন্নয়ন। এটি বৃহৎ, মাঝারি বা ক্ষুদ্র যে-কোনো মাত্রার হতে পারে।
পদ্ধতি – নদীতে বাঁধ দেওয়ার পর জলাধারে সঞ্চিত জলকে সুড়ঙ্গপথে, কংক্রিটের নালাপথে ভূঅভ্যন্তরস্থ পাইপের মাধ্যমে প্রধান নদীর প্রবাহ থেকে জলাভাবযুক্ত স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। এই পদ্ধতিকে Aqueduct পদ্ধতি বলে।
উদাহরণ– মহীশূর রাজ্যের কাবেরী নদীর জলকে এইভাবে ব্যবহার করা হয়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা খরাপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। Watershed Management-এর মাধ্যমে এলাকাগুলিতে জল ধরে রাখা সম্ভব হবে। পুরুলিয়াতে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়, তা Watershed Management, Rain Water Harvesting-এর মাধ্যমে ধরে রাখা সম্ভব। পাঞ্চেত জলাধারের জলকে বর্তমানে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে লাগানো হচ্ছে।
গুরুত্ব – (i) বন্যা নিয়ন্ত্রণ করে, (ii) বর্ষায় অববাহিকায় জল জমে না এবং ফসলের ক্ষতি হয় না, (iii) শুষ্ক ঋতুতে জলের জোগান অব্যাহত থাকে, (iv) ভৌমজলের ভাণ্ডার পরিপূর্ণ থাকে, (v) জলের চাষ বজায় রাখতে জলবিভাজিকার উন্নয়ন দরকার।
আরও পড়ুন – নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা