ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা ‘লিপি-কুশলী’ কাদের বলা হয়? এঁদের সম্বন্ধে প্রবন্ধ থেকে কী জানা যায়? |
টাইপরাইটার কিংবা ছাপাখানার যখন প্রচলন হয়নি তখন প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য লিপিবদ্ধ করে রাখতে ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’-দের প্রয়োজন হত। প্রাচীনকালে রাজদরবার কিংবা প্রশাসনিক কার্যালয়ে এদের খুব কদর ছিল। বাংলাদেশে রাজা-জমিদাররা লিপি-কুশলীদের ‘গুণী’-র সম্মান দিতেন এবং তাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন।
এঁদের হাতের লেখা সুশৃঙ্খল এবং প্রত্যেক অক্ষরের মাপ সমান হত। সাধারণ গৃহস্থরাও লিপিকরদের ডেকে পুথি নকল করাতেন। মুক্তোর মতো হস্তাক্ষরে লেখা এদের পুথি দেখলে ‘চোখ জুড়িয়ে যায়’। তবে কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী এদের পারিশ্রমিক প্রদান করা হত না। অষ্টাদশ শতকে একজন লিপিকর চার খণ্ড রামায়ণ কপি করে নগদ সাত টাকা, কিছু কাপড় আর মিষ্টি পেয়েছিলেন মাত্র। উনিশ শতকে ইংরেজ আমলে লিপিকরদের দিয়ে বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো হত। বর্তমান সময়ে কম্পিউটারে হাতের লেখার মতো হরফ পাওয়া সম্ভব। তাই বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনেও লিপিকর বা ক্যালিগ্রাফিস্টরা আর সমাদৃত হন না।