কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো – আজকের পর্বে কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি আলোচনা করা হল।
কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো
কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো। |
নদী উপত্যকা অঞ্চলের নরম মাটিতে পাতকুয়া খনন করে কপিকল, পারসিক চাকা, রেত প্রথা, জন্তু বা হাত দিয়ে টেনে যে জলসেচ করা হয়, তাকে কূপের মাধ্যমে জলসেচ ব্যবস্থা বলে। অপরদিকে পলি মৃত্তিকাযুক্ত অঞ্চলের নরম মাটিতে লোহা বা পলিথিনের পাইপ বসিয়ে বিদ্যুৎ, ডিজেল বা কেরোসিন চালিত পাম্পের সাহায্যে কৃষিজমিতে যে সেচকার্য করা হয় তাকে নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ বলে। কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি হল-
কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা
সহজ ও সরল পদ্ধতি
এই পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ ও সরল। তাই যেসব অঞ্চলে নদী বা খাল নেই সেই অঞ্চলে কৃষকেরা অতি সহজেই এই পদ্ধতিতে জলসেচ করতে পারে।
ব্যয় কম
এই পদ্ধতিতে কূপ ও নলকূপের খননের ব্যয় অত্যন্ত কম, তা ছাড়া নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণেরও প্রয়োজন হয় না।
স্বল্প স্থান
খালের সাহায্যে জলসেচ করলে কৃষিজমির বেশ কিছুটা অংশ নষ্ট হয় কিন্তু এই পদ্ধতিতে জলসেচ করলে কৃষিজমির কোনো অংশ নষ্ট হওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না।
স্বল্প জল সঞ্চয়
কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ করলে কৃষিজমিতে খুবই স্বল্প পরিমাণে জল সঞ্চিত হয়। ফলে চাষের কোনো ক্ষতি হয় না।
চাষের উপযোগী
এই পদ্ধতিতে জলসেচ করলে জলের সঙ্গে যে সালফেট, ক্লোরাইড ও নাইট্রেট পাওয়া যায় তা কৃষিকাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপযোগী।
স্বাধীন পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে কৃষক ইচ্ছেমতো এবং প্রয়োজনমতো স্বাধীনভাবে কৃষিজমির কাছেই কূপ ও নলকূপ খুঁড়ে সেচকার্য করতে পারে।
খরা পরিস্থিতির মোকাবিলা
খরা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এই কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের দ্বারা পরিস্থিতির সামাল দেওয়া যায়।
নিশ্চিত জলের জোগান
কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে সারাবছর সেচের জল পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে।
কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচের অসুবিধা
বেশি পরিমাণ জমিতে জলসেচ অসম্ভব
এই পদ্ধতিতে অর্থাৎ কূপ ও নলকূপের সাহায্যে একসঙ্গে বেশি পরিমাণ জমিতে জলসেচ করা যায় না।
ভৌমজলস্তরের অবনমন
দীর্ঘ সময় ধরে কূপ ও নলকূপের সাহায্যে জল তুললে ভৌমজলস্তর নীচে নেমে যায়। ফলে কূপ ও নলকূপগুলি অকেজো হয়ে যায়। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালে যখন জলের প্রয়োজন হয় তখন কূপগুলি শুকিয়ে যায়।
দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি
কূপ ও নলকূপের দ্বারা বেশি পরিমাণে ভৌমজল তুলে নিলে জলে আসেনিক, ফ্লুরাইড প্রভৃতি দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।
লবণতা বৃদ্ধি
এই পদ্ধতিতে সেচকার্য করলে লবণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন – নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা