‘কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের।’-কোন ব্যাপারে তপনের ‘জ্ঞানচক্ষু’ বন্ধ ছিল? সেই জ্ঞানচক্ষু কীভাবে খুলে গিয়েছিল তা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অবলম্বনে লেখো। |
লেখকদের সম্পর্কে আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপনের অন্য এক ধরনের ধারণা ছিল। লেখকদের সে মনে করত অন্য জগতের। সেক্ষেত্রে সে জানতই না-
(১) কোনো লেখককে কাছ থেকে কখনও দেখা যায়।
(২) লেখকরা তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো মানুষ।
অর্থাৎ এসব ব্যাপারেই তপনের জ্ঞানচক্ষু বন্ধ ছিল।
তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়েছিল যাঁর সঙ্গে, তিনি পেশায় ছিলেন একজন অধ্যাপক। মামার বাড়িতে গরমের ছুটির জন্যে কদিন থেকে যাওয়া তপন একদিন জানতে পারে তার নতুন মেসো একজন সত্যিকারের লেখকও। তিনি বই লেখেন এবং সে বই ছাপাও হয়। এই অবস্থায়-
(ক) লেখকদের কাছ থেকে দেখার প্রসঙ্গ নতুন মেসোকে কাছ থেকে দেখে তপন বুঝতে পারে লেখকদের অনেকটা কাছ থেকেও দেখা যায়।
(খ) লেখকরা বাবা-মামা-কাকার মতো মানুষ নতুন মেসোকে কাছ থেকে দেখে তপন বুঝতে পারে তার বাবা, ছোটোমামা কিংবা মেজোকাকুর মতো লেখকরাও দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বসেই ‘আরে ব্যস, এত কখনো খাওয়া যায়?’ বলে অর্ধেক তুলিয়ে দেন, চানের সময় চান করেন; ঘুমের সময় ঘুমান।
(গ) লেখকদের কাজ ছোটোমামাদের মতো লেখক মেসো তাঁর নিজের কাজ দিয়ে তপনকে বুঝিয়ে দেন লেখকরাও তপনের ছোটোমামাদের মতো খবরের কাগজের সব কথা নিয়ে প্রবলভাবে গল্প করেন, তর্ক করেন এবং শেষ পর্যন্ত ‘এদেশের কিছু হবে না’ বলে সিনেমা দেখতে কিংবা সেজেগুজে বেড়াতে বেরিয়ে যান।
-এভাবেই নতুন মেসোকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং লেখকদের সম্পর্কে নতুন উপলব্ধি হয় তার।